নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা দলীয় হয়ে যাওয়াতেই দেশে যত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের প্রবাসী মেয়ে শারমিন আহমেদ।
তিনি বলেন ‘দেশের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবীরাই দলীয় হয়ে গেছেন।
শনিবার নিউইয়র্কে প্রগ্রেসিভ ফোরামের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
শারমিন আহমেদ বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মুক্ত চিন্তার পরিবেশ। এর অভাব হলেই আমাদের ভিত্তিমূল (ফাউন্ডেশন) ধসে পড়বে।
এছাড়া ‘এরশাদ ফ্রিডম পার্টিকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন’ অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, জেল হত্যাকাণ্ডের খুনিদের কারাগারে প্রবেশে বাধার সময় খন্দকার মোশতাক স্বয়ং টেলিফোন করে অনুমতি দেন। সেই মোশতাক,তাহেরউদ্দীন ঠাকুরেরা কিভাবে মুক্তি পায় প্রশ্ন তোলেন তাজউদ্দীন আহমেদের মেয়ে শারমিন আহমেদ।
বক্তৃতায় মরহুম তাজউদ্দীন তনয়া আরো বলেন, “সৃষ্টি কর্তা আমাদেরকে জ্ঞান দিয়েছেন মেধা ও বিবেক দিয়েছেন, সবকিছু যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবার। কিন্তু আমাদের জাতিগত চরিত্রই যেন হয়ে গেছে, আমার পছন্দ না হলে প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি ভাল না হয় মন্দ। স্বাধীনতার পক্ষে বা স্বাধীনতার বিপক্ষে। এটা কিভাবে সম্ভব! সত্য প্রশ্ন করলে কিভাবে একজন মানুষকে রাজাকার বা আলবদর বলে দেয়া হয়। এই ধারা ভয়াবহ। এই ধারার অবসান ঘটাতে হবে। ”
বই লিখে ইতোমধ্যেই মৌলবাদী গ্রুপের সদস্য এবং পাকিস্তানি ও সিআইএ’র এজেন্ট উপাধি পেয়েছেন বলেও এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শারমিন আহমেদ ‘তাজউদ্দীন আহমেদ:নেতা ও পিতা’ বই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আরো বলেছেন,তাজউদ্দীন ছিলেন সত্যের সন্ধানী এবং সাহসী মানুষ। আমার বিরুদ্ধে অসত্যের অভিযোগ আনলে তাকেই খাটো করা হবে অসম্মান করা হবে।
সম্মেলনে ‘নতুন প্রজন্মের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রবাসের নতুন প্রজন্মের বিশিষ্ট আবৃত্তিকার,নৃত্য শিল্পী ও উপস্থাপিকা সেমন্তি ওয়াহেদ। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশ নিয়ে তাদের নানা ভাবনার কথা তুলে ধরে। এ সময় বাংলাদেশের রাজনীতির চর্চা এবং প্রবাসে নিজেদের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে হতাশার কথা ব্যক্ত করেন তারা।
প্রগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি খোরশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং আলীম উদ্দীনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ, চলচ্চিত্রকার কবীর আনোয়ার। সম্মেলন উদ্বোধন করেন মুত্তালিব বিশ্বাস। অসুস্থতার কারণে প্রধান আলোচক কবি শহীদ কাদরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৪