রাজশাহী: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করার জন্য আমরা সম্মেলন করি না। বরং ছাত্রলীগের শক্তিকে বিকেন্দ্রীকরণের জন্য আমরা সম্মেলন করি।
কথাগুলো বলেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ছাত্রলীগের ৪র্থ বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নেন তিনি। সেখানেই কথাগুলো বলেন।
রুয়েট অডিটোরিয়ামে দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভেদে ছাত্ররাজনীতি পরিবর্তন ও পার্থক্য থাকা উচিত। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির চরিত্র, অপরদিকে একটি মেডিকেল কলেজ কিংবা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির মধ্যে অবশ্যই কিছু পার্থক্য থাকা উচিত। বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সেখানকার শিক্ষার্থীদের জন্য যে ধরনের বাস্তবতা রয়েছে, একাডেমিক পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের ধরন, সিলেবাস, সেখানকার শিক্ষার্থীদের সার্বিক যে প্রয়োজন রয়েছে, সেই প্রয়োজনের আলোকে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি ঢেলে সাজানোরও প্রয়োজন রয়েছে। ছাত্রলীগ ওপর থেকে ছাত্ররাজনীতি আরোপ করে দেবে, সেই ছাত্ররাজনীতি ছাত্রলীগ বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, আসুন গতানুগতিকার বৃত্ত ভেঙে আমরা নতুনত্বের জয়গান গাই, নতুন ছাত্ররাজনীতি আমরা বাংলাদেশে নিশ্চিত করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন, যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছেন, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার কথা বলছেন, যে কারণে আমরা মনে করি যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে, তাদের সারা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দেওয়ার জায়গায় যেতে হবে। আমরা যেন প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছুটে চলি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে লড়াই, সেই লড়াই বর্তমান সময়েও যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা জারি রাখতে পারে।
সম্মেলনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ। উন্নত, আধুনিক, সৃজনশীল ও স্বনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে পুনরায় শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারাকে ধাবমান রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিটা আলাদা। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক বেশি চাপ থাকে। এরমধ্যেও আপনারা যেভাবে শেখ হাসিনাকে ভালোবেসে রাজনীতি করেন, সত্যিই এটি প্রশংসনীয়। একাডেমিক চাপের মধ্যে থেকেও আপনারা যেন মানুষের জন্য কিছু করেন-এটি আমার প্রত্যাশা থাকবে। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী একটি কথা সব সময় বলেন, তোমরা গবেষণা করো। আমরা জানি গবেষণা খাতে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন বা যে সহযোগিতা প্রয়োজন সেটা অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের কম। প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান আমাদের শিক্ষার্থীরা নতুন কিছু করার জন্য যে গবেষণা করবে, তাকে যাতে বেশি করে বরাদ্দ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ছাত্রলীগের ৪র্থ বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ইসফাক ইয়াসশির ইপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সাঈদ কনক, এনামুল হক তানান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী। সঞ্চালনা করেন রুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহাফুজুর রহমান তপু। সম্মেলনে রুয়েট ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও পদপ্রত্যাশীরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে রুয়েট ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
এসএস/এমজে