সিরাজগঞ্জ থেকে ফিরে: ‘বিরোধী দলে থাকলে জেহাদকে স্মরণ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে কেউ মনে রাখে না।
সম্প্রতি উল্লাপাড়ায় জেহাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের মুখোমুখি হলে বাংলানিউজের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন। জেহাদের খোঁজ নিতে এখন আর কেউ আসে না বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন অশিতিপর বসিরুন নেছা।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিতে এখন আর কেউ আসে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিরোধী দলে থাকলে জেহাদকে স্মরণ করে। ক্ষমতায় যাওয়ার পর মনে রাখে না। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য নেতারা আগে আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। অনেক দিন তাদেরও দেখিনা। ’
ছেলে জেহাদের নামে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় স্টেডিয়াম চান মা বসিরুন নেছা।
বয়স এখন ৮৫ চলছে। কমে গেছে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি। কষ্ট হয় কথা বলতেও।
তারপরেও এই বৃদ্ধার কণ্ঠে দৃপ্ত দাবি, ‘জেহাদ তো কোনো দল বা ব্যক্তির নয়। জেহাদ সকলের। তার স্মৃতি রক্ষায় উল্লাপাড়ায় তার নামে একটি স্টেডিয়াম সরকার যেন করে। ’
জেহাদের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত ১১ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে ছাত্রগণ জমায়েত অনুষ্ঠানে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা শুনেও খুব কষ্ট পেয়েছেন বসিরুন নেছা। তিনি বলেন, ‘এমন মৃত্যুর খবর আর শুনতে চাই না। ’
২০ বছর ধরে ছেলে হারানোর শোক বয়ে বেড়ানো বসিরুন নেছা অতীত স্মরণ করে বলেন, ‘জেহাদ বলেছিলো ৩০ অক্টোবর আসবে। কিন্তু এলো না। ’
দশ সন্তানের জননী তিনি। চার ছেলে ছয় মেয়ে। ভাই বোনদের মধ্যে নবম জেহাদ।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়ার সময়ে সরকারি আকবর আলী কলেজের বিএ’র পরিক্ষার্থী ছিলেন। ওই কলেজের ছাত্রদল সভাপতি ছিলেন তিনি।
জেহাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি বলেও মনে করেন তার মা।
তিনি বলেন, ‘দুই নেত্রীর দেশের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা উচিত। কারণ তাদের কাছে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের অনেক প্রত্যশা আছে। তাদের মনে রাখা উচিত, জেহাদ এখন এই জাতির সন্তান। সে কোনো ব্যক্তির নয়। ’
যে দল যখনই ক্ষমতায় যায় কিছু লোক তাদের ভুল পথে পরিচালিত করে বলেও মনে করেন জেহাদের মা।
বাংলাদেশ সময় ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১০