ঢাকা: সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি ঠেকাতে গিয়ে আহত হয়েছেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা মাসুম।
দুই গ্রুপের মারামারির সময় এক পক্ষের অনুসারী ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা মাসুমকে বেদম প্রহার করে।
এ সংঘর্ষে আরও আহত হয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান মুন্না, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মদ নূর আলম নোমান।
এ ঘটনার বিষয়ে নূর আলম নোমান বলেন, ছাত্রাবাসের (অনার্স) ৩০২ নম্বর রুমের একটি সিট নিয়ে ২৩ ব্যাচের ছাত্র সিয়ামের সঙ্গে কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শিব্বির আলম মনিরের ঝামেলা শুরু হয়। তারপর এ ঝামেলাকে কেন্দ্র করে সিয়ামের বন্ধু কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম সুজনকে জানালে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবের অনুসারীদের সঙ্গে তাদের সংঘাত শুরু হয়।
মূলত কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শিব্বির কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলামের অনুসারী। ঘটনার সময় রিয়াজুল কলেজের পাশ্ববর্তী নায়েমের গলিতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অবস্থান করছিলো।
কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আল রায়হান রকি বলেন, কলেজের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় শিব্বির তার ঢাকা কলেজের পরিচিতদের ফোন দিয়ে ঢেকে আনে। এসময় কলেজ ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মাসুম তাদেরকে ঝামেলায় না জড়াতে বলে কলেজে ফেরত যেতে বললে উল্টো মাসুমকেই পেটাতে শুরু করে ঢাকা কলেজ থেকে আসা ওই শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সহ-সভাপতি শিব্বিরের গ্রুপে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান, হাবিব নেওয়াজের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবের গ্রুপের সজীব নূরের উপর হামলা চালায়।
এসময় শিব্বিরের গ্রুপের হাসান, বিষ্ণু, আরাফাত, আশিক ককটেল, রামদা লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়। এসময় দুই গ্রুপের ঝামেলা ঠেকাতে যান কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা মাসুম।
কিন্তু এসময় সহ-সভাপতি শিব্বিরের হয়ে মারামারি করতে আসে ঢাকা কলেজের সাউথ হলের শাওন, অপু, সজিব। তারা রামদা, লাঠিসোঁটা দিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুমকে পেটাতে থাকে।
এসময় মাসুমকে বাঁচাতে গিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান মুন্না, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মদ নূর আলম নোমান আহত হয়। এসময় পাঁচটি বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়।
এসময় শিক্ষার্থীরা এসে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা মাসুমকে উদ্ধার করে কাছে পপুলার হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, আমি এখন গ্রামের বাড়িতে আছি। ফোনে জানতে পারলাম এ রকম ঘটনা ঘটেছে। যারা ক্যাম্পাসে এ ধরনের অপকর্ম করেন তারা ছাত্রলীগের আদর্শ ধারণ করেন না। আমার সেক্রেটারিকে মারধর করা হয়েছে। আমি ঢাকায় এসে বিষয়টি দেখবো।
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক বলেন, আমি বিষয়টি এখনো ক্লিয়ার না। ঝামেলার খবর শুনে কর্মচারীকে পাঠিয়েছিলাম। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত তিনজন আহত হয়েছেন। আমি খোঁজ নিচ্ছি। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশও বিষয়টি অবগত আছে।
কলেজটি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পিকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) অর্পিত ঠাকুর হালদার বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।
২০২২ সালের পহেলা জানুয়ারি মো. হাসিবুর রহমান হাসিবকে সভাপতি এবং মো. মাসুদ রানা মাসুমকে সাধারণ সম্পাদক করে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ছাত্রলীগের ১৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে এ কলেজ শাখা কমিটি তখন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের অধীনে ছিল।
বাংলাদেশ সময় ১০৫৩, ১৩ মার্চ, ২০২৪
এনবি/এমএম