কুমিল্লা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্য রাখছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নতুন করে তার সাড়ে চার মিনিটের একটি বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে রোশন আলী মাস্টার ওমরা হজ পালনের জন্য মক্কায় যাওয়া উপলক্ষে দেবিদ্বার পৌর এলাকার নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে ওই বিতর্কিত বক্তব্য দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।
তিনি বক্তব্যে আরও বলেন, '৮২ হাজার ভোট কি কম? এগুলোর অনেক ইতিহাস। এগুলো আপনারা বুঝবেন না, আপনাদের ভাইঙ্গা বুঝাইতে অইব। যাদের আমি নেতা বানাইছি তারা আমারে এখন... দিয়াও গনে না। আমাদের দলে অনেক মীরজাফর আছে। এগুলো যুগ যুগ ছিল, থাকবে। তারা যদি ভালো হয়ে যায় আমরাও ভালো হয়ে যাব। আর হজ করার পর যদি দেখি ভালো না হইছে, তাহলে মাঠে নাইম্যা পড়ব। '
তার এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করে সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেখানে তার ওই বক্তব্য সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন, এটা তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন। অবিলম্বে এমন বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর বলেন, তার লাগামহীন এসব কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী লীগ হাস্যরসে পরিণত হচ্ছে। তাকে কেউ থামাতেই পারছেন না। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিভিন্ন সভায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার নেতাকর্মীদের গালিগালাজ করেও বক্তব্য রেখে বিতর্কিত হন, যা সবাই দেখেছেন ও শুনেছেন। এরও আগে বিএনপির এক নেতার সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপে তাকে বলতে শোনা গেছে, "আওয়ামী লীগ ও নৌকা যারা করে তারা সব রাজাকারের বাচ্চা"। তার কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও বিব্রত। আসলে তিনি মাইক হাতে পেলে কী বক্তব্য দেবেন, তা নিয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন!
এ বিষয়ে জানতে রোশন আলী মাস্টারকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর তার সঙ্গে বিএনপি নেতা দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রহুল আমিনের একটি অডিও ফোনালাপ ফাঁস হলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তার শেল্টার নিয়ে বিএনপি যেন আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে নামে সে কথাও বলতে শোনা গেছে। এর প্রতিবাদে সাবেক সংসদ সদস্য রাজী ফখরুলের নেতাকর্মীরা রোশন আলীর মাস্টারের পদত্যাগের দাবিতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫১ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
ইইউডি/আরএ