সাভার (ঢাকা): ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় একটি রেস্টুরেন্টে গোপন বৈঠকের সময় আটক জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতাকর্মীকে গত বছরের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে শুক্রবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার ফুড প্লানেট রেস্টুরেন্টে গোপন বৈঠকের সময় তাদের আটক করা হয়। তারা সবাই আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার ডেন্ডাবর ও এর আশপাশে ভাড়া থাকেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার বাগমারা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে জিল্লুর রহমান (৪৫), নাটোরের বাগাতিপাড়া থানার লুৎফর রহমানের ছেলে আশিকুর রহমান (৪০), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার কাসাড়া গ্রামের বাবুলের ছেলে আনোয়ার (২৯), জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার ঢালুখাবাড়ি চরপাড়ার নাজিমুদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫০), টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার পাকুটিয়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪২), মেহেরপুর জেলার গাংনী থানার সাহেবনগর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আবুল বাশার (৪৩), টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার ভাওয়া গ্রামের মৃত মোজাফফর আলীর ছেলে আব্দুল কাদের (৬০), সিরাজগঞ্জ সদর থানার শিলদাহ গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩৩), আশুলিয়ার নয়ারহাটের ঘুঘুদিয়া এলাকার আলী আকবরের ছেলে আরমান হোসেন (৩৭), মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার সন্যাসীর চর এলাকার আব্দুল মান্নান খানের ছেলে জলিল খান (৪২), লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কান্দিরপাড় গ্রামের মো. মুসলিমের ছেলে সোহেল রানা (২৮), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার সিকিরচড় গ্রামের মৃত আরশাদ মিয়ার ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৫৩), বগুড়া জেলার ধনুট থানার বড়মোগাচর গ্রামের আব্দুল কাশেমের ছেলে আব্দুল করিম (২৯), নীলফামারীর ডোমার থানার উত্তর আমবাড়ি গ্রামের দারাজ উদ্দিনের ছেলে নুরনবী (৩৮), লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানার কালিকাপুর গ্রামের মৃত হেদায়েত উল্লাহর ছেলে তৈয়ব উল্লাহ (৪৭), ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার উরাগাছা গ্রামের মোহাম্মদ আলী মণ্ডলের ছেলে মোজাম্মেল হক (৪০), দিনাজপুর জেলার কোতোয়ালি থানার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মঞ্জুর হোসেনের ছেলে মিরাজ হোসেন (৩৪), আশুলিয়ার পলাশবাড়ি বটতলা এলাকার আবু জাফরের ছেলে মানিক (৩৪), বরিশালের মুলাদি থানার চরপদ্মা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে মো. হাসান (৩৫), বরিশাল সদরের চরকালামতি এলাকার আব্দুল মালেকের ছেল জসিমউদ্দীন (৪০), সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার চৌবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে জাহিদ হাসান (৪১) ও গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার দিকবাড়ী গ্রামের মো. গুলজার রহমানের ছেলে ফিরোজ কবীর (৩৫)।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামায়াত ইসলামীর গোপন বৈঠকের সময় বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আটকদের যাচাই-বাছাই শেষে জানা যায় তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। গত ২০২৩ সালের ১ আগস্টের একটি নাশকতা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ জুলাই সকাল ৬টার দিকে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার ইয়াসিন সুপার মার্কেটের সামনে জামায়াত ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা শফিকুর রহমানের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে যানচলাচলে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছিল। এসময় তারা গাড়ির কাচ ভাঙচুর শুরু করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। তাদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে পুলিশ সদস্য মাজহারুল ও সাইদুর আহত হন। এ সময় ঘটনাস্থলে আরও পুলিশ উপস্থিত হলে তারা একটি ককটেল বিস্ফোরণ কর পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানসহ সব নেতাকর্মীকে মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল লেখা একটি ব্যানার, বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ গাড়ির গ্লাস ভাঙার কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গতকাল আটক ২২ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নির্মল কুমার দাশ বলেন, আটকদের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এরআগে আটকদের যাচাই-বাছাই শেষে নিশ্চিত হওয়া যায় তারা ওই রেস্টুরেন্টে বসে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
জেএইচ