ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

রাজনীতি

নোমান-রাকিব হত্যায় কাশেম জিহাদীসহ ৩২ জনের নামে তদন্ত প্রতিবেদন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২৪
নোমান-রাকিব হত্যায় কাশেম জিহাদীসহ ৩২ জনের নামে তদন্ত প্রতিবেদন আবুল কাশেম জেহাদী: ফাইল ফটো

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে আলোচিত যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমাম হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবদেন জমা দিয়েছে পুলিশ। তদন্তে বহুল আলোচিত আবুল কাশেম জেহাদীসহ ৩২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের এক বছর দুই মাস পর বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া লক্ষ্মীপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শকের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক সফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দিয়েছেন। মামলার ধার্য তারিখে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবু ইউসুফের আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। আদালত তখন পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন।

প্রধান অভিযুক্ত আবুল কাশেম জেহাদী চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ঘটনার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের দু'বারের চেয়ারম্যান ছিলেন। ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

নোমান জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাকিব জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

আলোচিত এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন ১৮ জন। তাদের মধ্যে পুলিশ একজনকে অভিযোগ থেকে বাদ দিয়ে ১৭ জনকে অভিযুক্ত করে। এছাড়া তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রমাণ হওয়ার পর নতুন করে আরও ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে মামলার আসামির সংখ্যা দাঁড়াল ৩২ জনে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে যাদের অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাদের আসামি করা হয়েছে। তদন্তে প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদীসহ ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

ঘটনা ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার নাগেরহাট সড়কে যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ ও অজ্ঞাতনামা ১৫ জনকে আসামি করা হয়।

তবে ঘটনার পর থেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে আবুল কাশেম জেহাদী। যার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দুইযুগ ধরে এলাকায় অস্ত্রধারী বাহিনী গঠন করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

নিহত নোমান ও রাকিবের স্বজনরা বলছেন, প্রধান আসামি কাশেম জিহাদি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু ১৪ মাস পেরিয়ে গেলেও কাশেম জিহাদিসহ ছয়জনকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। অথচ জিহাদী হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস রেকর্ড ও কল করে অনবরত হুমকি দিচ্ছেন। তার বাহিনীর সদস্যরাও এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

মামলার বাদী ও নিহত আবদুল্লাহ আল নোমানের বড় ভাই বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, দুই মাস আগেও কাশেম জিহাদী মোবাইল ফোরন আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী কাশেম জিহাদী মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর আমরা অসহায়ের মতো দেখছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।