ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগে কমিটি বাণিজ্য

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৩
ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগে কমিটি বাণিজ্য

ময়মনসিংহ: কমিটি ঘোষণার দু’বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও মাত্র চারটি ইউনিটে নতুন কমিটি গঠন করতে পেরেছে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ।

বিতর্কিত নেতাদের নেতৃত্বে নতুন কমিটি করার কারণে ঘোষণার পরপরই ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

সর্বশেষ নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি করার পরেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দ্বন্দ্ব চরমে ওঠায় এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালের অভিযোগ তুলেছেন।

আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের ‘চালিকাশক্তি’ এ সংগঠনের এহেন অবস্থায় জেলা ছাত্রলীগের তৃণমূল ও মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, তাজ উদ্দিন রানাকে সভাপতি ও এবিএম আখতারুজ্জামান রবিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয় ২০১২ সালের ১৭ জুন।

সূত্র মতে, জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাণিজ্যের সূত্রপাত ভালুকা উপজেলা কমিটি দিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, ২০১২ সালের ১৭ জুন মনিরুজ্জামান মামুনকে সভাপতি ও মাহমুদুল হাসান পাঠান শাতিলকে সাধারণ সম্পাদক করে ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা ছাত্রলীগ।

জামায়াত নেতার ছেলেকে সভাপতি ও রাজাকারের নাতিকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার পর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে।

পরে ওই বছরের ২৩ জুলাই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ওইদিনই খোকন ঢালীকে সভাপতি ও মিনার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ।

এ কমিটি ঘোষণার পর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তাজ উদ্দিন আহমেদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক এ. বি. এম. আখতারুজ্জামান রবিন তাদের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের উভয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে।

একই সূত্র জানায়, এ বছরের ২৭ এপ্রিল হাফিজুর রহমান রিপনকে সভাপতি ও রেজাউল ইসলাম ভূইয়া সোহেলকে সাধারণ সম্পাদক করে নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ।

কিন্তু কমিটি ঘোষণার মাত্র দু’দিন পর ২৯ এপ্রিল এ কমিটিকে কুচক্রীমহল অনুমোদিত দাবি করে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তাজ উদ্দিন আহমেদ রানা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন। পরদিন ৩০ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথভাবে নান্দাইল ছাত্রলীগের পূর্বের কমিটির সভাপতি-সম্পাদককেই বৈধ ঘোষণা করেন।

এরপর তারা দু’জন আর এক থাকতে পারেননি। কমিটি গঠন নিয়ে কৌশলে তাদের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে দু’জনেই পৃথক অভিযোগ তুলে পানি ঘোলা করেন। অনেকের মতে, এ জল ঘোলার নেপথ্যে আছে কমিটি নিয়ে বাণিজ্য।

সূত্র জানায়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব ও কমিটি নিয়ে বাণিজ্যের কারণে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে ফুলবাড়িয়া, হালুয়াঘাট, ফুলপুর, মুক্তাগাছা ও গফরগাঁও উপজেলার কমিটি। এসব ইউনিটে নতুন কমিটি করতে পারেনি জেলা ছাত্রলীগ।

তবে কমিটি নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তাজ উদ্দিন আহমেদ রানা বলেন, “কমিটি নিয়ে বাণিজ্যের খবরটি সঠিক নয়। ”

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সাধারণ সম্পাদক এ. বি. এম. আখতারুজ্জামান রবিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: তানিম কবির, নিউজরুম এডিটর/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।