ঢাকা : জামায়াতের দুই শতাধিক সিনিয়র নেতাকে নজরদারিতে রাখছেন গোয়েন্দারা। এদের মধ্যে সাবেক আমীর গোলাম আযম এবং বতর্মান ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল হোসেন ও সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম রয়েছেন।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে এক ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, ‘মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত জামায়াত নেতারা যাতে পালিয়ে বা আত্মগোপনে যেতে না পারেন সেজন্য উপরের নির্দেশে তাদের নজরে রাখা হয়েছে। ’
এছাড়া জামায়াতের যে কোনো প্রকার সম্ভাব্য নাশকতা ঠেকানোও নজরদারির আরেকটি কারণ বলে জানা গেছে। দলের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করায় জামায়াত ক্যাডাররা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। এমনকি আত্মঘাতী হামলা ও গুপ্তহত্যার আশঙ্কাও করছেন তারা। তাই ঢাকাসহ সারাদেশের সন্দেহভাজন নেতাদের সার্বক্ষণিক নজরে রাখা হচ্ছে।
এদিকে জামায়াত নেতারা নজরদারি এড়াতে আশ্রয় নিচ্ছেন নানা কৌশলের। তাদের গোপন রাজনৈতিক তৎপরতা সামলাতে অনেক সময়ই হিমশিম খাচ্ছেন গোয়েন্দারা। এছাড়া জামায়াত নেতারা মাঝে মধ্যেই মোবাইল বন্ধ করে রাখছেন।
গোলাম আযম, মকবুল আহমেদ ও এটিএম আজহারুল ইসলাম ছাড়া নজরদারিতে থাকা অন্য নেতারা হলেনÑ আব্দুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, অধ্যাপক মজিবুর রহমান, অধ্যাপক তসলিম আহমেদ, হামিদুর রহমান আযাদ এমপি, নুরুল ইসলাম বুলবুল, এমএ আজিজ, মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খান, শাজাহান চৌধুরী, আফসারউদ্দিন চৌধুরী, শামসুল ইসলাম প্রমুখ।
গোয়েন্দা নজরদারি ও জামায়াত নেতাদের আত্মগোপনের চেষ্টা সম্পর্কে জানতে চাইলে জামায়াতের প্রচার সম্পাদক তসলিম আহমেদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘সরকার যেভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে জামায়াতের তিন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে তাতে ভয় একটু থাকেই। কাকে কখন পুলিশ গ্রেপ্তার করবে তা বলা মুশকিল। সরকারের আচরণে আমাদের নেতাকর্মীরা আতঙ্কে থাকতেই পারে!’
মাঝারি পর্যায়ের এক জামায়াত নেতা জানান, তারা অনেকেই পুলিশের ভয়ে নিজের বাড়িতে থাকছেন না। কেউ যাচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনের বাসায়। কেউবা রাত পার করছেন মেসে।
এদিকে জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযম প্রতিবছর তার ছেলের কাছে লন্ডনে যান। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে আর লন্ডন যেতে দেওয়া হয়নি। চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পুলিশ তার পার্সপোর্ট জব্দ করে। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ আর ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে মদদ দেওয়ার অভিযোগে তাকেও বিচারের সম্মুখীন করানো হবে এটা অনেকটা নিশ্চিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, ৯ জুলাই ২০১০