ঢাকা: আগামী ১২ জানুয়ারি শপথ নিতে যাচ্ছে নতুন মন্ত্রিসভা। এর আগে গত ৯ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনাকে সরকার গঠনের আহবান জানান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন ১২ জানুয়ারি তিনি সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।
দশম জাতীয় সংসদের কারা থাকছেন মন্ত্রী পরিষদে, সে নিয়ে চারিদিকে চলছে জোর গুঞ্জন।
এটি একেবারেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নিজের এখতিয়ার। সংবিধান অনুযায়ী পদাধিকারবলে তিনিই তা নির্ধারণ করবেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় কার হাতে যাচ্ছে সেটি নিয়েও রয়েছে জোর গুঞ্জন।
আব্দুল মতিন খসরু, আনিসুল হক নাকি ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ১৯৬৭ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯৯ – ২০০০ এবং ২০০৮ – ২০০৯ সালে বাংলাদশে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক।
আওয়ামী লীগের গত শাসনামলে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ছিলেন অন্য অনেক মন্ত্রীর চেয়ে ব্যতিক্রম। বড় কোনো সমালোচনা হয় নি তাকে নিয়ে। ছিলেন বিতর্কের উর্ধ্বে।
আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার সময়ে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা, জেলহত্যা মামলার বিচারকাজ। তার সময়েই বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা আসে। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীতেও রাখেন বড় ভুমিকা। গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তবে প্রদীপের আলোর নীচের অন্ধকারের মতো শফিক আহমেদের রয়েছে যৎসামান্য ব্যর্থতাও। গতবার দায়িত্ব গ্রহণের পর ন্যায়পাল নিয়োগের কথা বললেও সেটি করতে পারেন নি। বিচারক নিয়োগের নীতিমালার কথা একাধিকবার বললেও গত পাঁচ বছরেও সেটি তিনি সম্পন্ন করতে পারেন নি।
তবে আইন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা মন্ত্রণালয় থেকে চাইছেন, মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ আসেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, শফিক আহমেদ অনেকগুলো বিচারকাজ শুরুর সঙ্গে যুক্ত। তাই তিনি থাকলেই সেগুলো শেষ করতে সুবিধা হয়।
বাবার পথ ধরে এবারই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। বাবা সংসদ সদস্য সিরাজুল হকের ছেলে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি কিনা বঙ্গবন্ধু হত্যামামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন। সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিচার সম্পন্ন করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন।
একই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মুহাম্মদ মনসুর আলী এবং আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে। এর সঙ্গে আরও আছে, বিডিআর হত্যামামলা, দুদকের প্রধান আইনজীবী এবং তারেক রহমানের মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী।
আনিসুল হক এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) থেকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন।
দেশবরণ্যে এই আইনজীবী দশম জাতীয় সংসদে আইন মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের নামে ফেসবুক পেজটিতেও লেখা রয়েছে এ বিষয়ে।
সেখানে লেখা হয়, মন্ত্রী পরিষদ চূড়ান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বড় কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটলে কিংবা কারো ব্যাপারে তেমন কোনো অনুরোধ না থাকলে তাতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
কসবা-আখাউড়াবাসীকে আনন্দের জোয়ারে ভাসানোর মতই সুসংবাদ। আইনমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বিশিষ্ট আইনজীবী, কসবার কৃতী সন্তান অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
সবাইকে বিষয়টি শেয়ার করার জন্যও সেখানে অনুরোধ জানানো হয়।
কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় এই তিন হেভিওয়েট ব্যক্তির মধ্যে কার হাতে যাচ্ছে সেটি জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময় ১৯৪১ ঘন্টা, ১০ জানুয়ারি ২০১৪
সম্পাদনা: জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর