ঢাকা: শুক্রবার জুমা’র নামাজের পর সারাদেশের মসজিদে মসজিদে আরাফাত রহমান কোকোর জন্য দোয়া কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ কারণেই টানা হরতালে বিরতি দিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি চাইছেন, সদ্য প্রয়াত ছোট ছেলে কোকোর দোয়া মাহফিলটা ভালোয় ভালোয় হয়ে যাক। তারপর ফের লাগাতার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা যাবে।
টানা ৭২ ঘণ্টা হরতালের শেষ দিন মঙ্গলবার তাই লাগাতার হরতালের ঘোষণা দিতে গিয়েও দেয়নি তার দল।
দলীয় সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে পেলেও কেবল টিভি ও ইন্টারনেট সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন আছে খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে। মোবাইল নেটওয়ার্কও নির্বিঘ্ন নয়। তারওপর দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রোল বোমা হামলায় মানুষ মারার ঘটনায় একের পর এক মামলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে।
প্রতিদিনই তার কার্যালয় এলাকায় হচ্ছে হরতাল ও অবরোধ বিরোধী বিক্ষোভ। কার্যালয় ঘেরাওয়ের প্রচেষ্টাও জোরালো হচ্ছে দিন দিন। সব মিলিয়ে সব দিক থেকেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে খালেদা জিয়ার।
সূত্রমতে, এমন পরিস্থিতিতে এখন আর পিছু হটার কোনো পথ নেই বলেই ভাবছেন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট প্রধান।
দল ও জোটের সিনিয়র নেতারাও তাকে বলছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়েও হঠাৎ আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ায় অনেক মাশুল গুণতে হয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীনে জোটকে। ফের আন্দোলন শুরু করতে করতে রাজনীতির ময়দান গলে বেরিয়ে গেছে বছর খানেক সময়। এবার ফের আন্দোলনে বিরতি দিলে পুনরায় আন্দোলন জমানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই ‘ডু অর ডাই সিচুয়েশনে’ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার গত্যন্তর নেই বিএনপির।
সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া নিজেও চান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার হরতাল চালিয়ে যেতে।
কিন্তু গত ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়া হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কবলে ঢলে পড়া ছোট ছেলে আরাফাত কোকের জন্য কুলখানি বা দোয়া মাহফিল গত ১০ দিনেও করা হয়নি।
অথচ বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী চাইছেন, অন্তত এক দিনের জন্য হলেও দলীয়ভাবে কোকোর জন্য দোয়া-মাহফিল আয়োজন করতে।
এমন দাবির মুখে কুলখানিতে রাজি না হলেও দোয়া মাহফিলে সম্মতি দিয়েছেন খালেদা জিয়া। তার অনুমতি নিয়ে তাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারাদেশের মসজিদে মসজিদে কোকার জন্য দোয়া কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আর এই কর্মসূচি যাতে নির্বিঘ্নে হতে পারে, যাতে অধিক সংখ্যক মানুষ অংশ নিতে পারে, সেজন্য লাগাতার হরতালের ঘোষণা না দিয়ে শুক্রবার দিনটাকে মুক্ত রাখা হয়েছে।
পূর্বঘোষিত টানা ৭২ ঘণ্টা হরতাল বুধবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এর সঙ্গে আরো ৩৬ ঘণ্টা জুড়ে দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার। এ দফার টানা হরতাল তাই শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায়।
দলীয় সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার হরতালের সময় শেষ হওয়ার আগেই ফের হরতালের ঘোষণা দেবে বিএনপি। শনিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া সেই হরতাল লাগাতারই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৫