ঢাকা: বিএনপির নেতারাই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশ মানতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল হক হানিফ।
বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর-১০ গোলচত্ত্বরের ফলপট্টিতে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘হত্যা-সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের’ বিরুদ্ধে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি নেত্রী অবরোধ ডেকেছেন। কিন্তু তাদের নেতারাই অবরোধে রাস্তায় গাড়ি বের করে হামলার শিকার হয়েছেন। যেমন, রিয়াজ রহমান হরতাল-অবরোধে গাড়ি বের করে হামলার শিকার হয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয়, খালেদা জিয়ার নির্দেশের প্রতি তাদের নেতাকর্মীদেরই কোনো সমর্থন নেই।
হানিফ বলেন, জনগণ আজ হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করেছে। মানুষ এখন আর এগুলো মানতে চায় না। বিএনপি নেত্রী কি কারণে এ অবরোধের ডাক দিয়েছেন তা জনগণ জানে না। এমনকি বিএনপির নেতারাও জানেন না, ঠিক কি করণে খালেদা জিয়া এ অবরোধের ডাক দিয়েছেন। ফলে এখন খালেদা জিয়ার প্রতি জনগণের আর আস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, অতীতে বাংলাদেশের সকল অপকর্মের হোতা ছিলেন খালেদা জিয়ার দুই ‘গুণধর’ ছেলে। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এলেও হাওয়া ভবনের নামে তারা আরেকটি সরকার চালাতেন। ফলে তাদের শাসন আমলে বাংলাদেশের অর্জন ছিল পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান হওয়া, জঙ্গিবাদের উত্থান, একযোগে সারাদেশে বোমা হামলা ইত্যাদি। তাই জনগণ তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এসেছে।
অবরোধ ডাকার প্রথমদিকে এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত করার প্রতিশ্রুতির বিষয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আমরা তখন বুঝতে পারিনি, একটি রাজনৈতিক দল অবরোধের নামে গাড়িতে পেট্রোল বোমা মেরে এভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে। এটা রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড হতে পারে না। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয় আমরা সেরকম ব্যবস্থা নেবো।
আরাফাত রহমান কোকোর নামাজে জানাজায় যে পরিমাণ কর্মী-সমর্থক হয়েছিল, তাতে জনগণের মধ্যে বিএনপির সমর্থন এখনও আছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, জনগণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চায়। আরাফাত রহমান কোকোর জানাজায় মানুষের উপস্থিতিই তার প্রমাণ। কিন্তু দলের নেতাকর্মীরা কোনো ধরণের অযৌক্তিক হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি মানতে চান না। তাই বিএনপির ডাকা হরতালে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, হাসিনা সরকার যেমন দেশের উন্নয়ন করতে পারে তেমনি কিভাবে দেশ থেকে জঙ্গি-সন্ত্রাস নির্মূল করতে হয়, সেটাও জানে। সময় হলেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে জনগণ যদি সম্মিলিতভাবে তাদের রুখে দেয়, তবে দ্রুত দেশ থেকে সন্ত্রাস নির্মূল যাবে। এজন্য সাধারণ মানুষের সহায়তা চাই। তাদের সহায়তায় আমরা দেশ থেকে চিরতরে জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ উৎখাত করে মানুষের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে আনবো।
ঢাকা মহানগর (উত্তর) স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলহাজ মোবাশ্বের চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার, সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৪