ঢাকা: এই মুহূর্তে সরকার ও দলে সংলাপের কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দেশে চলমান অবস্থায় যে কোনো সময় আলোর ঝলকানি দেখা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রী।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সংলাপের দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আগ বাড়িয়ে কোনো কথা বলা উচিত না। তাছাড়া আমাদের রেসপন্সিবল-পজেটিভলি বিহ্যাব করতে হবে। এ দায়িত্বশীলতা সবার মধ্যে থাকা উচিত। দেশটা ১৬ কোটি মানুষের, আমরা যারা রাজনীতি করি, দায়িত্বশীল পদে আছি, আমাদের কারোরই দায়িত্বহীন বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।
‘এ পর্যন্ত সংলাপের বিষয়ে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি, দলেও (আওয়ামী লীগ) আলোচনা হয়নি। ওয়ার্কিং কমিটিতে হয়তো কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই মুহূর্তে কোনো সংলাপ অনুকূলে নয়। এই মুহূর্তে আমি ভিন্ন কোনো মন্তব্য বা বক্তব্য দিতে পারি না। কারণ সরকার এবং দলে এখন পর্যন্ত সংলাপের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ’
চলমান রাজনৈতিক অবস্থার সমাধান কী- জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ঝড় আসে, ঝঞ্জা আসে, অন্ধকার আসে, আবার চলেও যায়। আমার মনে হয়, দেখবেন এই অন্ধকারের মধ্যেও আলোর ঝলকানি হয়তো কোনো সময় দেখা যাবে। এ অবস্থা দীর্ঘকাল চলতে পারে না। তাই বলে আত্মবিনাশী আগুনে আমরা কী পুড়ে মরব?
‘অবরোধের যে আত্মবিনাশী আগুন, তা সারা দেশকে পুড়ছে। এটার সমাধানও আছে, পরিণতিও আছে’, বলেন মন্ত্রী।
নির্বাচন সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ- খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি উনার চিন্তা থেকে বলেছেন। আমরা বিরোধী দলে থাকলে আমরাও বলতাম।
আলোচনার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, কূটনৈতিক-বিদেশিদের উদ্বেগ থাকবে। কারণ তাদের অনেকে দাতা, উন্নয়ন সহযোগী, তাদের উদ্বেগ থাকবে। বন্ধু দেশ আছে, ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি আছে, জাতিসংঘ আছে। আমরা তো ফোরাম থেকে বিচ্ছিন্ন নই। তাদের উদ্বেগ থাকতে পারে। আমাদের সমস্যা, আমাদেরই সমাধান করতে হবে। একটা সংলাপ করার জন্য সংলাপ করতে হবে, এরকম সংলাপ করে কোনো লাভ নেই।
এখন যে অবস্থা তাতে কী সংলাপের পরিবেশ আছে? প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনার সন্তান মারা গেলো, আপনি শোকে কাতর, আমি দেখতে গেলাম। নম্বর ওয়ান প্রতিপক্ষ, দেখতে গেলাম, শোক জানাতে গেলাম সে সুযোগটাও কাজে লাগানো গেল না। আমার মনে হয় ছোট ছোট ব্যাপার থেকে বড় বড় সুযোগ আসতে পারে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর জন্য দরজা বন্ধ করা হয়নি, সংলাপের জন্য দরজা বন্ধ করা হয়েছে। সংলাপের জন্য দরজা খুলে যেতেও পারতো। আমি এও মনে করি প্রধানমন্ত্রী যখন ৫ জানুয়ারির আগে গণভবনে সংলাপের অনুরোধ এবং গণভবনে আমন্ত্রণ করেছিলেন, সেদিন আসলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। এ সংঘাত-নাশকতার আগুন হয়তো দেখতে হতো না। সে ভুলটা তো তারাই করেছেন, তার খেসারত কী জনগণ দেবে? এটাই তো প্রশ্ন।
সুশীল সমাজের সংলাপের আহ্বান গ্রহণযোগ্য কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নাগরিক সমাজের উদ্বেগ থাকতে পারে। কিন্তু নাগরিক সমাজ তো সমাধান করে দিতে পারবে না। নাগরিক সমাজের বক্তব্যের বিষয়ে সরকরি দলের নেতারা স্পস্ট করেই বলেছেন, আমি ভিন্ন বক্তব্য দিতে পারি না। সংলাপের মানসিকতা তৈরি করা দরকার। মানুষ পুড়িয়ে বাধ্য করবেন সংলাপ করো, এটা হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫/আপডেটেড : ১৪৩৪ ঘণ্টা