ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের সহিংস আন্দোলনে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার যোগসাজশ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, দেশকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের দিকে টেনে নেওয়া হচ্ছে।
শনিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এইচটি ইমাম বলেন, আন্তর্জাতিক যোগসাজশে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালাচ্ছে। যারা কোনোদিনও বাংলাদেশকে মনেপ্রাণে স্বীকার না করে সব সময় বিরুদ্ধাচারণ করেছে, সেসব দেশই এ কাজে সহযোগিতা করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমানে শুধু পেট্রোল-বোমা নয়, এর সঙ্গে বিভিন্ন রাসায়নিকও যুক্ত করা হচ্ছে। নতুন নতুন অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, এ অস্ত্র কোথা থেকে আসছে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে পাকিস্তান, এরপর আফগানিস্তানের তালেবান হয়ে আইএসআইএস। তারপর মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে লিবিয়া পর্যন্ত যেতে পারবেন। এই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের মধ্যে বাংলাদেশকে টেনে নেওয়ার জন্যই এ সহিংস চেষ্টা।
এই সন্ত্রাসের সঙ্গে নতি স্বীকারের কোনো প্রশ্নই ওঠে না বলে সাফ জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা।
তিনি জানান, সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো আলোচনা হতে পারে না। আগে তারা সন্ত্রাস বন্ধ করে নিজেদের অন্যায় স্বীকার করুক; এরপর আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনার চেষ্টা হতে পারে। কিন্তু আমাদের দিক থেকে এই ব্যাপারে সাড়া দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠেনা।
এইচ টি ইমাম আবারও প্রশ্ন রেখে বলেন, আমি আলোচনা করবো কার সঙ্গে? যে আমাকে মারতে আসছে তার সঙ্গে? জেনেশুনে আততায়ীর সঙ্গে আলোচনা কীভাবে হতে পারে?
তিনি বলেন, চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিত্রাণের এক উপায় গণপ্রতিরোধ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠলে সন্ত্রাসীরা পারবে না। এর প্রমাণ হচ্ছে, গত কয়েক দিনে কেবল ঢাকা শহরেই ২৮ জন সন্ত্রাসীকে জনগণ ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, আপনারা হাজার দিন হরতাল দিন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, হরতাল কনসার্ন (উৎকণ্ঠা) না, পেট্রোল-বোমাই কনসার্ন। আর এ সহিংসতার শিকার দেশের প্রান্তিক কৃষক থেকে বড় ব্যবসায়ী সবাই।
সমঝোতা আহ্বানকারীদের উদ্দেশে গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনারা তো সব ক্ষেত্রেই জনমত যাচাই করতে চান। তবে আপনারা হরতাল আহ্বান করে জনগণকে বলুন- আপনারা পেট্রোল-বোমা মারবেন না। যারা আপনাদের সমর্থন করেন, সরকারের পতন চান, তারা গাড়ি চালাবেন না।
আর আমরাও বলি, আপনাদের ভয়ভীতির কোনো কারণ নেই। নিরাপদে গাড়ি চালান। আর এ প্রস্তাবে যদি তারা রাজি না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট করে কথা বলা দরকার।
এ সন্ত্রাস ও সহিংসতার মূলে রয়েছে বুদ্ধিজীবীব হত্যার পলাতক জল্লাদ চৌধুরী মাঈনুদ্দীনদের অর্থ আর শিখণ্ডী হিসেবে রয়েছেন, খালেদা জিয়া।
এ সত্য কথাটা বলার লোকসংখ্যা যেদিন বাড়বে, সেদিন দেশে আর কোনো সমস্যা থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন গণশিক্ষামন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি অসহযোগিতার ডাক দিয়েছেন। কিন্তু, জনগণ যে আপনাকেই অসহযোগিতা করছে, এটা আপনি বোঝেন না? গণঅভ্যূত্থান আপনার বিরুদ্ধেও হতে পারে।
‘চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থা’ শিরোনামে এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজসহ আরো অনেকে।
বেসরকারি সংস্থা ‘জার্নি’র আয়োজনে ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানমের সভাপতিত্বে সেমিনার সঞ্চালনা করেন- অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু আলশ মো. শহীদ খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
** ‘খালেদাকে রাজনীতি থেকে বিতাড়নই সমাধান’