ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আবেগাপ্লুত, মুক্তি আন্দোলনের বাড়ি

জেসমিন পাপড়ি ও মহিউদ্দিন মাহমুদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫
বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আবেগাপ্লুত, মুক্তি আন্দোলনের বাড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর থেকে: রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরকে (বঙ্গবন্ধুর বাড়িকে) আবেগাপ্লুত ও মুক্তি আন্দোলনের বাড়ি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফররত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি।

তিনি বলেন, ১৯৭১ তখন বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের আবেগের সঙ্গে ছিল।

এখানে আসলে একদিকে গুলির দাগ, রক্তমাখা ছবি। যারা এখানে খুন হয়েছেন, তাদের কথা মনে পড়লে মনটা খারাপ হয়ে যায়।

শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়ি পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিকেল পাঁচটা ৩৫ মিনিটে মমতা ব্যানার্জি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে এসে ২৫ মিনিট অবস্থান করেন। এ সময় তাকে বেশ আবেগাপ্লুত দেখা যায়।

জাদুঘর পরিদর্শন শেষে বাংলানিউজের এক প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ১৭ বছর আগে (১৯৯৮ সালে) আওয়ামী লীগের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসে এই বাড়িটিতে এসেছিলাম। এই বাড়িটা মুক্তি আন্দোলনের জায়গা। এটি আবেগাপ্লুত বাড়ি। এ বাড়ির সঙ্গে গণতন্ত্রের আন্দোলন ও মুক্তির আন্দোলনের ইতিহাস জড়িয়ে আছে।

আবেগের সঙ্গে তিনি বলেন, এখানে বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় একই পরিবারের অনেকগুলো মানুষ খুন হয়েছেন।   এতগুলো মানুষের (’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে নিহত হওয়া) রক্তমাখা ছবি দেখলে গা শিউরে ওঠে। সেটা ছিল বিভীষিকাময়!

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ তখন বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের আবেগের সঙ্গে ছিল। এখানে আসলে একদিকে গুলির দাগ, রক্তমাখা ছবি। যারা এখানে খুন হয়েছেন, তাদের কথা মনে পড়লে মনটা খারাপ হয়ে যায়।

এ সময় মমতা বলেন, আন্দোলন করেই তো আমাদের জন্ম। সেই আন্দোলেনের কথা, সেই অতীতকে তো স্মরণ করতে হয়। অতীতকে স্মরণ না করলে কীভাবে আমাদের নতুন প্রজন্ম জানবে মুক্তি আন্দোলনের কথা।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা। এখানে যখন মুক্তির আন্দোলন চলছিল তখন তাদের প্রত্যেকটা কথা, গান, স্লোগান ও বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল।

এ বাড়িতে এসে মন খারাপ হয়ে যায়। একদিকে গুলির দাগ, রক্তের দাগ, এতগুলো খুনের নিশানা দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু সেই দিনগুলোতে ফিরে গেলে, অতীতে ফিরে গেলে ইতিহাসকে স্মরণ করা হয়।

যতবারই বাংলাদেশে আসবেন, ততবারই এ বাড়িতে আসবেন বলেন বলেও জানান মমতা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসবেন অথচ বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জড়িত এ বাড়িতে তিনি আসবেন না, এটা হতেই পারে না।

এ সময় মমতা ব্যানার্জি বেশ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের পর তিনি পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।

এর আগে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব শেখ হাফিজুর রহমান, সদস্য রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, পেপী সিদ্দিক, শাহানা ইয়াসমিন শম্পা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশুরা হোসেন ও কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস সিদ্দিক হোসেন চৌধুরী।

জাদুঘরে পৌঁছেই প্রথমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান মমতা ব্যানার্জি। এরপর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের পর মমতা সোনারগাঁওয়ে হোটেলে ফিরে যান। পরে একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাত আটটা ৫০ মিনিটে ২১ জন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে তিনদিনের সফরে ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি।

প্রতিনিধি দলে সঙ্গীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, চলচ্চিত্রনির্মাতাসহ অন্যান্যরা রয়েছেন।

ঢাকা সফরে মমতা ব্যানার্জি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় তিস্তার পানিবণ্টন, স্থলসীমানা সমস্যাসহ ছিটমহল সমস্যা সমাধানের আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।