ঢাকা: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন ও বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা প্রতিরোধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট।
শুক্রবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৪ দলের গণমিছিল শেষে এ শপথবাক্য পাঠ করান জোটের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের হরতাল-অবরোধে নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ গণমিছিলের আয়োজন করা হয়। গণমিছিলটি বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, গুলিস্তান থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে গিয়ে শেষ হয়।
গণমিছিলের আগে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খুনির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না। খালেদা জিয়া মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। নির্বাচন হবে ২০১৯ সালে। নির্বাচনের সময় সংলাপ হবে। তবে সেই সংলাপ হবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে।
মানুষ হত্যা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশের জনগণ রয়েছে। শেখ হাসিনার বিজয় হবেই হবে।
এ সময় ৮, ৯, ১০ মার্চ সারাদেশে ১৪ দলের গণপদযাত্রা করার ঘোষণা দেন নাসিম। সিরাজগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া ও গাইবান্দায় কেন্দ্রীয়ভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে তিনি জানান।
সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, নিজেরা আন্দোলনে না পেরে বিদেশিদের ডাকছেন খালেদা জিয়া। এর আগেও অমিত শাহের ফোনের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ‘ফোরটোয়েন্টি’ (প্রতারণা) করেছেন। আপনি আসলেই ‘ফোরটোয়েন্টি’।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, আজকে সারাদেশের ছেলে-মেয়েদের বিনামূল্যে বই দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তারা পড়ালেখা করছে, অথচ তাদের পরীক্ষাও দিতে দিচ্ছেন না খালেদা। আপনি এসএসসিতে ফেল করেছেন, আপনি কী বুঝবেন পড়ালেখার মর্যাদা?
যেসব পত্রিকা-টেলিভিশন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের খবর প্রচার করে উৎসাহ প্রদান করছে, ভবিষ্যতে ওই মিডিয়ার মালিকসহ সবার বিচার করার হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন বলেন, আজকে কিছু পত্রিকা ও টেলিভিশন তাদের (বিএনপি) কর্মসূচি, নাশকতা ও পেট্রোল বোমার ছবি ছাপাচ্ছে। আপনারা এগুলো কোত্থেকে পান? আপনারা এগুলো জেনে পুলিশে খবর না দিয়ে প্রচার করেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেন। আগামীতে এমন উৎসাহ প্রদানের জন্য কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবার বিচার করা হবে, বাংলাদেশে তাদের স্থান দেওয়া হবে না।
শেখ সেলিম বলেন, কোনো বিদেশি এদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। দেশের রাজনীতি এ দেশের মানুষেরাই নিয়ন্ত্রণ করবে।
বিএনপির কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আন্দোলন নয়, খালেদা জিয়ার সন্ত্রাসী তৎপরতা। তিনি গণতন্ত্র, মানবতা ও ইসলামের শত্রু। তিনি সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করলেই বাংলাদেশ শান্ত হবে মন্তব্য করে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, এটি একটি কঠিন সময়। এই কঠিন সময়ে আমরা কঠিন শত্রুকে মোকাবেলা করছি। এরা হচ্ছে আগুন সন্ত্রাসী। এর নেপথ্যে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করলেই বাংলাদেশ শান্ত হয়ে যাবে।
খালেদাকে রাজনীতি থেকে বিতাড়নের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, জেপির মহাসচিব শহীদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলঅদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫
** ৮-১০ মার্চ সারা দেশে ১৪ দলের পদযাত্রা