ঢাকা: পুলিশ, র্যাব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুরস্কার ঘোষণাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতায় গত মাসের শেষের দিকে কমে এসেছিলো নাশকতার ঘটনা। কিন্তু গত কয়েকদিনে রাজধানীসহ সারাদেশে নাশকতার ঘটনা বেড়েছে আবারও।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত চারদিনে কমপক্ষে ২০টি গাড়িতে আগুন, পেট্রোলবোমা হামলা ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নতুন করে নাশকতা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে জনমনে আতঙ্ক।
পুলিশের দাবি, নতুন কৌশলে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালাচ্ছে নাশকতাকারীরা।
তবে তাদের এসব কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে দ্রুতই নাশকতাকারীদের গ্রেফতার করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে এসে রাজধানীতে নাশকতা চালাচ্ছে ভাড়াটে নাশকতাকারীরা। এরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে হামলা চালিয়ে দ্রুত রাজধানী ছাড়ছে।
এদিকে নতুন করে আবারো নাশকতার ঘটনায় দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
শিশির নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা মনে করেন, নাশকতা ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো কঠোর হতে হবে।
গত বুধবার (৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর হাজারীবাগে শিশুপার্ক এলাকায় ১৪ দলের সমাবেশে হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় নাশকতাকারীরা। এ ঘটনায় হাজারীবাগ থানার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ও রিয়াজ আহম্মেদ নামে এক সাংবাদিক আহত হন।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কাঞ্চি হোটেলের সামনে খালেদা জিয়ার দু’টি মামলার শুনানি চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। অন্যদিকে বুধবার দিনগত রাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ বাস-ট্রাকে পেট্রোলবোমা হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় দগ্ধ হন ১৭ জন।
গত সোমবার (২ মার্চ) বিজয়নগরে দু’টি প্রাইভেটকারে পেট্রোলবোমা হামলা চালায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। পরে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
গত মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর জাতীয় বেতার ভবন, শাহবাগ, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে হাতবোমা হামলা চালায় নাশকতাকারীরা। এছাড়া উত্তরা ও কদমতলী এলাকায় দু’টি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়। এসব ঘটনায় আহত হন সাতজন।
একইদিনে ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কমপক্ষে ১৫ যানবাহনে আগুন, ভাঙচুর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হাতবোমা হামলা চালায় হরতাল-অবরোধকারীরা। এসব ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অর্ধশতাধিক মানুষ।
রাজধানীতে হঠাৎ নাশকতা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, বাইরে থেকে ঢাকায় এসে নাশকতাকারীরা নাশকতা চালাচ্ছে, এসব নাশকতাকারীকে চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারের অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
র্যাবের মিডিয়া উইং পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বাংলানিউজকে বলেন, গত ২/৩ দিন ধরে হঠাৎ নাশকতার ঘটনা বেড়ে গেছে। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না বাড়ে সেজন্য র্যাবের টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০১৫