ঢাকা, রবিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

ময়মনসিংহে সাড়া নেই বিএনপির সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠনে

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৫
ময়মনসিংহে সাড়া নেই বিএনপির সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠনে

ময়মনসিংহ: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পাড়া মহল্লায় সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেও ময়মনসিংহে এতে দলীয় নেতা কর্মীদের কোনো সাড়া মেলেনি। নির্দেশনার পর  নয়দিন পেরিয়ে গেলেও ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে কমিটি গঠনের কার্যক্রম।



দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ কমিটি গঠনে এরই মধ্যে দক্ষিণে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি কমিটি। এদিকে উত্তরে এখনও কোনো তৎপরতাই শুরু হয়নি। দলীয় প্রধানের নির্দেশ বাস্তবায়নে গড়িমসি করায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের কর্মীরা।

দলীয় নেতা কর্মীরা জানান, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির অধিকাংশ নেতা কর্মী আত্মগোপনে  অথবা কারাগারে রয়েছেন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ।

মাস দেড়েক আগে সংগঠনের সভাপতি এ.কে.এম.মোশাররফ হোসেনের বাসা ঘেরাও করে পুলিশ।   এর পর থেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন এ নেতা। এ কারণে চলমান আন্দোলন সংগ্রামে একমাত্র সিনিয়র নেতা হিসেবে ওয়াহাব আকন্দই মাঠে রয়েছেন।

দক্ষিণ জেলা যুবদল সভাপতি, জেলা ছাত্রদল সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, শ্রমিক দল সাধারণ সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতা মাঠ থেকে নিজেদের আড়াল করে রেখেছেন। জেলার গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ১৩টি উপজেলার প্রায় সব কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদেরও একই অবস্থা।

ফলে মধ্যম সারির নেতাদের নিয়ে কয়েকদিন আগে শহরের হরিকিশোর রায় রোডের দক্ষিণ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জরুরি সভায় কমিটি গঠনের আলোচনা  হয়। তবে কমিটি গঠন করতে পারেনি দক্ষিণ বিএনপি।  

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ বলেন, ম্যাডামের ( খালেদা জিয়া) নির্দেশ অনুযায়ী তারা কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

সিনিয়র নেতারা জেল হাজতে থাকায় এবং একাধিক নেতার নামে হুলিয়া থাকায় কমিটি গঠনে দেরি হচ্ছে। শিগগিরই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক মাস ধরে আলাদা কর্মসূচি পালন করছে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও জামায়াত-শিবির। এছাড়া ময়মনসিংহে ২০ দলের অন্যান্য শরীকদলের ন্যূনতম অস্তিত্ব নেই। দু’একটি কাগুজে দলের শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকলেও বিএনপির সঙ্গে কোনো কর্মসূচিতে তাদের দেখা যায় না।

এদিকে সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠনের বিষয়ে জেলা জামায়াতের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক আকন্দ উল্টো দাবি করেন। তিনি জানান, পাড়া মহল্লায় বিএনপি ও জামায়াতের কমিটি  আগে থেকেই রয়েছে। শুধু এগুলো সক্রিয় করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে দু’দলের ঐক্য ঠিক রয়েছে। কৌশলগত কারণে আলাদাভাবে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তবে  দলীয় কোন্দলে জর্জরিত ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি। দলীয় আহ্বায়ক খুররম খান চৌধুরী উত্তরের বিভিন্ন উপজেলায় পকেট কমিটি গঠন করেছেন বলে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছেন তার কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ অন্যরা।

এখানে প্রায় প্রতিটি উপজেলায় বিএনপির দুটি করে কমিটি রয়েছে। একটি আহ্বায়ক এবং অপরটি যুগ্ম আহ্বায়কদের পক্ষের।

দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া পাড়া মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেও খুররম খান চৌধুরী এখন পর্যন্ত ঢাকা থেকে নড়েননি।

দলটির তৃণমূলের একাধিক নেতা জানান, সংগঠনের তিন যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, আবুল বাশার আকন্দ ও আহম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ প্রায় এক মাস ধরে নাশকতার অভিযোগে মামলার আসামি হয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। ফলে খালেদার নির্দেশের পরেও কমিটি গঠনের ন্যূনতম তৎপরতা শুরু হয়নি উত্তর জেলা বিএনপিতে।

ঢাকায় অবস্থানের বিষয়টি স্বীকার করে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খুররম খান চৌধুরী বলেন, দু’একটি ইউনিয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে  অধিকাংশ এলাকায় এখন পর্যন্ত সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়নি। পুলিশ যেভাবে অত্যাচার করছে, প্রত্যেকে জান বাঁচানোর চিন্তায় রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।