ঢাকা, রবিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

মঞ্জুর হত্যা মামলা

অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে ১৪ মে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৫
অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে ১৪ মে

ঢাকা: বহুল আলোচিত মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে রাষ্ট্রপক্ষের সময় বাড়ানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পাঁচ দফায় সময় বাড়ানো হলো।



ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত (অস্থায়ী) ঢাকার ১ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহহার আকন্দ সময়ের আবেদন জানালে আদালতের বিচারক এসএম সাইফুল ইসলাম আগামী ১৪ মে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন পুনর্নির্ধারণ করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি সিআইডিকে অধিকতর তদন্ত করে ২২ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেলেন আদালতের তখনকার বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ। এরপর আবেদন জানিয়ে আরও চারবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়িয়ে নিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আদালতে মামলার প্রধান আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ হাজির ছিলেন না। তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তার পক্ষে আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম হাজিরা প্রদান করেন।

তবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার অপর দুই আসামি মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক ও লে. কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া।

৫ আসামির মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত আছে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল লতিফ ও লে. কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শামসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম।

উভয়পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি মামলাটির রায়ের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আগের বিচারক হোসনে আরা আক্তার বদলি হওয়ায় নতুন বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ ফের যুক্তিতর্ক শোনার সিদ্ধান্ত নেন। ওই দিন তিনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নতুন দিন ধার্য করেন ২৭ ফেব্রুয়ারি।

কিন্তু গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মামলাটির পুন:তদন্তের আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি আসাদুজ্জামান খান রচি। তিনি আবেদনের পক্ষে শুনানিতে বলেন, এ মামলায় সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। ফলে আরো অনেককে সাক্ষী করা যায়নি। সঠিকভাবে তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনসহ ওই সাক্ষীদের আদালতে হাজির করা যেতো। তাদের সাক্ষ্য-প্রমাণে মামলাটি সঠিকভাবে প্রমাণ করা যেতো। এ আবেদন মঞ্জুর করে আদালত সিআইডিকে অধিকতর তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন।

চট্টগ্রামে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেনারেল মঞ্জুরের বড় ভাই ব্যারিস্টার আবুল মনসুর আহমেদ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই বছরের ১৫ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ। এর আগে ১ মার্চ আসামি এমদাদুল হক, ১২ মার্চ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমান এবং ১৮ জুন মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ১১ জুন কারাগারে থাকা এরশাদকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

গত ২০ বছরে বিভিন্ন সময়ে ২৩ জন এ মামলাটিতে বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মঞ্জুর হত্যা মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে এর আগে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দাখিল করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা,  মার্চ ১২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।