ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

ঈশ্বরদীতে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা নিহত

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫
ঈশ্বরদীতে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা নিহত ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে বারুলি স্নান উপলক্ষে আয়োজিত চৈত্র মেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে বাঁধন খন্দকার নামের এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের স্টেশন পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ২০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

এ ঘটনার জের ধরে মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিঠুর প্রাইভেট কারসহ স্থানীয় নেতাদের ৭টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

নিহত বাঁধন খন্দকার মুলাডুলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম বাদলকে দায়ী করছেন নিজ দলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন,  বাদলের পিস্তলের গুলিতে বাঁধন খন্দকার নিহত হয়েছেন। আশরাফুল আলম বাদল মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক।

প্রত্যদর্শীরা বাংলানিউজকে জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের বারুলি স্নান পূজা উপলক্ষে সাধুর পুকুর কালি মন্দির চত্বরে শত বছরের ঐতিহ্যমন্ডিত চৈত্র পূজা বুধবার শুরু হয়।

ওই মেলায় গিয়ে মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিঠু ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে জুয়ার বোর্ডসহ কয়েকটি স্টল উঠিয়ে দিলে সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে মেলার মাঠেই আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম বাদল পিস্তল দিয়ে গুলি করলে ছাত্রলীগ নেতা বাঁধন খন্দকারকে গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যায়।

স্টেশনের পাশের দোকানদার প্রত্যক্ষদর্শী খোকন খন্দকার বাংলানিউজকে জানান, অনেক মানুষের সামনে আশরাফুল আলম বাদল পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করলে বাঁধন খন্দকার গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে।

মুলাডুলি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার মালিথা জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সামনেই এ ঘটনা ঘটে।

মেলায় উপস্থিত হাতেম আলী বাংলানিউজকে জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মিঠু ও হাবিব মেলার মাঠে কয়েকটি দোকান উঠিয়ে দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিঠু জানান, মেলার মাঠে জুয়া খেলা চলছিল, সে জুয়ার বোর্ড সরিয়ে নিতে বলায় জুয়াড়িরা পরিকল্পিতভাবে তাদের ওপর হামলা করে। এ মেলায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা খন্দকার মিলন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আইনাল হকের নেতৃত্বে বিভিন্ন জুয়ার আসর বসানো হয় বলে জানান তিনি।

সংঘর্ষে আহত আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেন মিঠু, হাবিবুর রহমান মাছ হাবিব, আমিনুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, ইয়াদ আলী, আশরাফুল আলম বাদল, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জামাল, ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেনসহ ২০ জনকে স্থানীয় ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাশ বাংলানিউজকে জানান, সংঘর্ষের পর পরই ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত ছাত্রলীগ নেতার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।