ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপির কপালে আরো ভোগান্তি আছে

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫
বিএনপির কপালে আরো ভোগান্তি আছে

ময়মনসিংহ: দুপুর দেড়টা। হরতালের সমর্থনে ময়মনসিংহ শহরের হরিকিশোর রায় রোডের দক্ষিণ জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল শেষ হয়েছে মাত্র।



প্রখর খরতাপের মধ্যে মিছিল শেষ করেই দলীয় কার্যালয়ের বারান্দায় চেয়ারে বসলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ অন্যরা। প্রত্যেকেই নিজের কপালের ঘাম মুছছিলেন।

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কঠোর নির্দেশের পরেও আন্দোলনের মাঠে বড় পদধারী নেতাদের অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে দলীয় এক কর্মী প্রশ্ন তুলতেই রাজ্যের সব ক্ষোভ আর হতাশা ভর করলো দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক এ সাংগঠনিক সম্পাদকের কন্ঠে।  

বিক্ষুব্ধ কন্ঠে তিনি বলছিলেন, যাদের বড় বড় পদ দেওয়া হয়েছিল তারাই আজ নিষ্ক্রিয়। একেকজন কেন্দ্রেও আছেন, জেলাতেও আছেন। আবার উপজেলাতেও নেতৃত্বে আছেন। গত ৭১ দিনেও তাদের কোনো খবর নাই। এ কারণেই আন্দোলন ফ্লপ। তৃণমূলই আন্দোলন ধরে রাখছে। তবে ওইসব নেতাদের কারণেই বিএনপির কপালে আরো ভোগান্তি আছে।

পাশের চেয়ারে বসেই এ নেতার ক্ষোভের কথাগুলো নীরবে শুনছিলেন যাচ্ছেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী রানা, সাবেক সংসদ সদস্য নুরজাহান ইয়াসমিন, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা শাহ শিব্বির আহমেদ বুলুসহ আরো কয়েকজন।

এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নেতা-কর্মীরাও হুমড়ি খেয়ে পড়লেন দলীয় কার্যালয়ের বারান্দায়। নিজেদের মনের আকুতি সাবেক এ নেতার কন্ঠে উচ্চারিত হওয়ায় তারাও জোরালোভাবে সায় দিলেন।

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া বললেন, এখন আমাদের দল পয়সা দিয়ে নেতা বানায়। যখন ছাত্রদল করছি তখন চান্দাবাজি করি নাই। ওয়াহাব (দক্ষিণ জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক) আমগর সাথে দল করছে। ওরাও কখনো চান্দাবাজি করে নাই। আর এখন....। হঠাৎ থেমে যান তিনি।

রাগ ও ক্ষোভে অগ্নিশর্মা হয়ে এ নেতা আরো বলেন, যারা দলের জন্য ত্যাগী, নিবেদিতপ্রাণ তাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে রাখা হয়নি। অথচ সেন্ট্রাল কমিটির নেতা যারা তাদের থানায় কোনো আন্দোলন নাই। এরা কি করছে?

তিনি বলেন, জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে। কিন্তু ভোগ বিলাসের লোক দিয়্যা আন্দোলন হবে না। স্যুট-কোট পড়া নেতারা কাপড়ের ভাজ ভাঙতাছে না। দলের জন্মলগ্ন থেকে পরীক্ষিত, ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে যারা দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই আন্দোলন বেগবান হচ্ছে না।  

প্রবীণ এ রাজনীতিক এবার সমর্থন পেলেন তৃণমূলের। দক্ষিণ জেলা যুবদল কর্মী ইনসান ও সোহেল বলেন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি, জেলা যুবদল সভাপতি বিদেশে নিরাপদে সটকে পড়েছেন। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ও মহিলা আন্দোলনে আসে না। তবে এরা কী সরকারি দলের সঙ্গে ব্যালেন্স করছে। ক্ষোভ উদগীরণ হয় এ দু’কর্মীর কন্ঠে।

জানতে চাইলে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ বলেন, আমি আমার পক্ষ থেকে উপজেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। যারা এলাকায় আছেন তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে তাগিদ দেই।

কোনো কোনো উপজেলায় ছোট করে হলেও মিছিল, পিকেটিং হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ না থাকলেও মূলত তৃণমূল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে যোগ করেন তিনি।   

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।