ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

গুলশানে অনীহা...

মান্নান মারুফ, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫
গুলশানে অনীহা... ছবি : জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে অবস্থান করছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।

বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কার্যালয়টি নিয়ে সবার আগ্রহ তুঙ্গে।

সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু সাধারণ মানুষ, সবার রাজনৈতিক আলোচনায় স্থান পেয়েছে গুলশান কার্যালয়।

সেখান থেকেই খালেদা জিয়া চলমান-অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন। অবরোধের মধ্যে দফায় দফায় চলছে হরতালও।

তবে আলোচনা এমনকি সংবাদমাধ্যমের খবরে থাকলেও সংবাদকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছে একঘেয়ে হয়ে উঠেছে এই জায়গা।
 
অনেকেই আর আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না, দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারাও খালেদার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন না নিয়মিত।

সোমবারও (২৩ মার্চ) সেখানে গিয়ে সুনসান পরিস্থিতি দেখা যায়।

খালেদার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়, কার্যালয়কে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি তেমন নেই। নেই সংবাদকর্মীদের ভিড়ও।

হাতে-গোনা কয়েকজন সংবাদকর্মী অলস সময় কাটাচ্ছেন। আছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য। নিজেদের মধ্যেই আলাপ-আলোচনা করে সময় পার করছেন তারা।

কার্যালয়ে অবস্থানের প্রথম দিকে এখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে শরিক দলের নেতারাও দেখা করতে যান খালেদা জিয়ার সঙ্গে।

কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে অনেকেই ফেরত গিয়েছেন, তবে গুলশানের ৮৬ নম্বর সড়কের ওই বাড়িটির সামনে ছিল মানুষের কলরব!

এখন খালেদার কার্যালয়ের গেট গাড়ি দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এরপাশে বসে আছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুই-তিনজন সদস্য।

কার্যালয়ে কারা যাচ্ছেন আর বের হচ্ছেন তাদের নাম ঠিকানা লিপিবদ্ধ করছেন তারা। এছাড়া সেখানে বাড়তি কোনো নিরাপত্তা চোখে পড়েনি।

এমনকি রোববার (২২ মার্চ) থেকে ২০ দলের হরতালেও চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেননি কোনো নেতা।

ভেতরে খালেদার সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই অবস্থান করছেন তার কার্যালয়ের স্টাফ ও কয়েকজন নেতা। সেখানে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আবদুল কাইয়ুম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, খালেদার বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ কয়েকজন নেতা।

এছাড়া রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী সিএসএফ এর সদস্যরা।

এরমধ্যে খালেদার বেয়াইন তারেক রহমানের শ‍াশুড়ি ও সাঈদ ইস্কান্দরের স্ত্রীও আসেন সেখানে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুলশান কার্যালয়ে আসা-যাওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে অনীহা চলে এসেছে। কোনো কাজ নেই, দিন-রাত এখানে বসে থাকতে থাকতেই এ ধরনের বিরক্তি সৃষ্টি হয়েছে।  

অবরোধের পাশাপাশি ৭২ ঘণ্টার হরতাল চললেও দলের কোনো নেতাকে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যেতে দেখা যায়নি।

তবে মাঝে মাঝে আইনজীবী ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা খালেদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।

দলীয় সূত্র জানায়, আগে খাবার-দাবার থেকে শুরু করে গুলশানের এই বাড়িটি নিয়ে সবার মধ্যে একটি আগ্রহ ছিল। কিন্তু এখন কেউ এখানে আসেন না।

কার্যালয় সূত্র জানায়, এখন শুধু খালেদার জন্যই খাবার আসে এখানে। আগের মতো এতো আগ্রহ ভরে কেউ আসেন না আর।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ৩ জানুয়ারি রাত থেকে অবস্থান নেন খালেদা জিয়া।

এরপর ৫ জানুয়ারি বিকেলে জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার জন্য কার্যালয়ের সামনে এলেও সেখান থেকে বের হতে পারেননি তিনি।

ওই সময় অনির্দিস্টকালের অবরোধ ডেকে নিজের কার্যালয়েই অবস্থান করছেন তিনি।

এরমধ্যে অবরোধের পাশাপাশি সরকারি ছুটির দিন শুক্র-শনি বাদে সপ্তাহের অন্য কর্মদিবসগুলোতে হরতাল পালন করছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।