ঢাকা: জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করার সাহস না পেলেও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া সে ধৃষ্ঠতা দেখাচ্ছেন। এ মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সৈয়দ আশরাফ মঙ্গলবার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কেন, কার স্বার্থে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চান? সাহস থাকলে জনগণের সামনে তা তুলে ধরুন। দেশের মানুষের কাছে রায় নিন, তারা বিচার চায় কিনা। দেখেন জনগণ কি রায় দেয়। আমরা জনগণের রায় নিয়ে য্দ্ধুাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি। বিচার শুরু হয়েছে, এই প্রক্রিয়া চলবে। কোনো শক্তিই বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। ’
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘‘হুমকি দেয়া হচ্ছে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর। ১৫ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা, নারী-শিশুকে নির্মমভাব হত্যা করা হয়। এটা কোন বর্বরতা। জননেত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন, তার সন্তানদের হত্যা করতে চান। যতই হুমকিই দেন শেখ হাসিনা ভয় পান না। ভয় পেলে তিনি দেশে ফিরতেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর লন্ডনে এক সভায় শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। আমিও তখন লন্ডনে ওই সভায় উপস্থিত ছিলাম। দুইজন লোক এসে আমাকে ডেকে নিয়ে বলল, যদি শেখ মুজিব হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয় তবে শেখ হাসিনাকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় দেয়া হবে। ’’
সৈয়দ আশরাফ বলেন,‘‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবো এক সময় এই কথা বলার সাহস আমাদেরও ছিলো না। সাহস হারিয়ে ফেলেছিলাম। বিচারের কথা কেউ উচ্চারণ করেননি। অনেকে বলেন, তারা নাকি বিচার প্রক্রিয়া এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। এটা কোনো ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব ছিলো না। শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং উপযুক্ত শাস্তি বাংলার মাটিতে হবেই। এই বিচার শুধু বিচারের জন্য বিচার নয়। এই বিচারের মধ্য দিয়ে হত্যা, নারী নির্যাতন, বৃদ্ধিজীবী, শিক্ষক, ছাত্র হত্যার ইতিহাস বেরিয়ে আসবে। ’’
তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে যুদ্ধাপরাধের ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, একদিকে আদালতে বিচার চলছে। অন্য দিকে এই যুদ্ধাপরাধীদের জনতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
আশরাফ বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবর্তন না হলে দেশ পরিবর্তন হবে না। আওয়ামী লীগ যা বলে তা বাস্তবায়ন করেই ছাড়ে। বাস্তবায়নের আগে ঘরে ফেরে না। তিনি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০০৮ সালের নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ছবিসহ ভোটার তালিকার দাবির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘‘এ সবই আওয়ামী লীগ চেয়েছে এবং বাস্তবায়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ বলেছে বংলাদেশকে বদলে দেবে, এটারও বাস্তবায়ন হবে। ’’
তিনি ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘‘ওই সময় আমাদের মধ্যে বিশ্বাসের সংকট দেখা দিয়েছিলো। কাকে বিশ্বাস করবো কাকে নিয়ে কাজ করবো এই রকম একটি অবস্থা ছিলো। এই পরিস্থিতিতে কেবল স্বেচ্ছাসেবক লীগ আমাদের সঙ্গে ছিলো। ’’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের সামনে ‘স্বাধীনতা চত্বরে’ বিকেলে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাউসার। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়, ২০১০, জুলাই ২৭, ২০১০