ঢাকা: কিছুদিন আগে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। পরিবহনসহ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংসের চেষ্টা করেছে।
২০ দলীয় জোটের গত তিন মাসের লাগাতার অবরোধ ও হরতালে পেট্রোলবোমায় দগ্ধদের স্বজনরাসহ মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা, সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, ছাত্রদের ব্যানারে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বললেন।
বুধবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ার প্রতিবাদে গুলশান দুই নম্বর গোল চত্বরের পাশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার কোনো অধিকার খালেদা জিয়ার নেই। তার ভোট চাওয়া মানে আগুনে পোড়া মানুষগুলোর স্বজনদের সঙ্গে তামাসা করা।
মানববন্ধন থেকে খালেদা জিয়াকে ভোট না চেয়ে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে একাধিক ব্যানারও বহন করেন তারা।
এসব ব্যানারের ‘খালেদা জিয়া অগ্নিদগ্ধ স্বজনের দোহাই, আপনি আমাদের কাছে ভোট চাইবেন না’। ‘খালেদা জিয়া আমার স্বজনকে কেনো পোড়ালেন, জবাব দিন’। ‘খালেদা জিয়া আমাদের লেখাপড়ার ক্ষতি করে আপনি তরুণ প্রজন্মের কাছে ভোট চাইতে পারেন না, ফিরে যান’। ‘খালেদা জিয়া বাস পুড়িয়ে শ্রমিক ও জনতার কাছে বাস মার্কায় ভোট চান কোন মুখে। ’ ‘আমাদের ব্যবসার ক্ষতি করে আমাদের কাছে ভোট চেয়ে লোক হাসাবেন না, ফিরে যান। ’ এ ধরনের অসংখ্য লেখা প্রদর্শন করা হয়।
বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে এ মানববন্ধন। এতে বিভিন্ন পেশার প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেন, আপনারা দেখেছেন, কিছু দিন আগে কিভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় যারা ধরা পড়েছে তারা বিএনপি-জামায়াতের কর্মী। এ থেকে বোঝা যায়, বিএনপিই কিছুদিন আগে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।
তিনি বলেন, এখন খালেদা জিয়া যখন মানুষের কাছে ভোট চাইতে যান, তখন আগুনে পোড়া মানুষগুলোর স্বজনদের খুব কষ্ট হয়। এসব মানুষের কাছে তার ভোট চাইতে যাওয়া মানে তাদের সঙ্গে চরম তামাসা করা। তাই সবার উচিত খালেদা জিয়া যেখানে ভোট চাইতে যাবেন, সেখানেই তাকে প্রতিহত করা।
সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ায় বাধা দেওয়া ঠিক হবে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, সরকার বাধা দিক, এটা আমরা চাই না। তবে শান্তিপূর্ণভাবে সবখানেই সাধারণ মানুষের খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ার বাধা দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আগুনে পোড়া মানুষগুলোকে দেখতে খালেদা জিয়া হাসপাতালে যাননি। কিন্তু এখন তিনি ভোট চাইতে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ চায়, তিনি ভোট না চেয়ে ফিরে যান।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া উর্মি জানান, গত ২৩ জানুয়ারি মাতুয়াইল কাঠের পুল এলাকায় একটি বাসে পেট্রোলবোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী সালাউদ্দিন আগুনে ঝলসে যান। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটিতে চিকিৎসাধীন।
উর্মী বলেন, সরকারের দেওয়া অর্থ সহায়তা দিয়ে তিনি দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোনো রকম দিনযাপন করছেন। স্বামীকে নিয়ে তাকে দিনের পর দিন হাসপাতালে কাটাতে হচ্ছে। এতো কিছুর পর বিএনপি নেত্রীকে ভোট চাইতে দেখলে খুব কষ্ট হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ইনসান মিয়া জানান, তিনি দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের অধীনে যুদ্ধ করেছেন। বর্তমানে মোহাম্মদপুরে একটি মুদিখানার দোকান দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।
বিএনপির টানা হরতাল-অবরোধে তার ব্যবসায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যবসার ক্ষতি করার পর খালেদা জিয়া আমাদের কাছে ভোট চাইতে এলে খুব কষ্ট হয়। তাই খালেদা জিয়াকে বলতে চাই, আপনি ফিরে যান।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫
এএসএস/আরএম/