ঢাকা: বিজয়চিহ্ন দেখিয়ে কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা ‘সত্যের বিজয়’-এ সামিল হয়েছেন বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যরিস্টার তুরিন আফরোজ।
শনিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ফোন করে বাংলানিউজের কাছে নিজের এই মনোভাব প্রকাশ করেন তিনি।
তুরিন আফরোজ বলেন, আমি মনে করি তাদের ভি চিহ্নে সত্যের বিজয় হয়েছে। আর এই সত্যের বিজয়ে আমরা বিজয় চিহ্ন দেখানোর আগে অপরাধীর পরিবারের সদস্যরা বিজয় চিহ্ন দেখিয়েছে। এটা খুবই ইতিবাচক যে, কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা অন্তত তার অপরাধের বিচারের রায়কে সমর্থন জানিয়েছে।
কিন্তু কামারুজ্জামানের মৃতুদণ্ড কার্যকর হতে যাওয়ার বিষয়টিকে তার পরিবারের সদস্যরা শহিদী মর্যাদা হিসেবে দেখছেন এবং এ কারণেই তারা বিজয়চিহ্ন দেখিয়েছে কি না প্রশ্ন করলে তুরিন আফরোজ বলেন, এই মৃত্যুতে শহীদ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মানবতাবিরোধী একজন অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হলে কি সে শহীদ হয়? পাল্টা প্রশ্ন রাখেন তুরিন আফরোজ।
তুরিন আফরোজ আরো বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কামারুজ্জামানের বিচার হয়েছে। সে বিচারে কামারুজ্জামান আইনজীবী নিয়োগ করে দীর্ঘ আইনি লড়াই করেছেন। তাছাড়া কামারুজ্জামান যদি ইসলামী আন্দোলনই করে থাকবেন তাহলে বিচারিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেন কেন? কেন সর্বোচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় দেওয়ার পর বিজয়চিহ্ন দেখালেন না তার স্বজনরা?
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কামারুজ্জামানের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শেষ দেখা করতে যান স্ত্রী-সন্তান, ভাইসহ তার পরিবারের সদস্যরা। বিকেল পাঁচটা ২৫ মিনিটে সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎ শেষে কারাগারের ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন তারা।
বের হয়েই সংবাদ মাধ্যমের সামনে বিজয়চিহ্ন দেখান কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা। এমনকি তাদের সঙ্গে থাকা এক শিশুও হাত উঁচিয়ে বিজয় চিহ্ন দেখায়।
তখন জানতে চাইলে কামারুজ্জামানের বড় ভাই কফিলউদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার ভাই প্রাণভিক্ষা চাননি, দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
শনিবার বিকেল চারটা ১০ মিনিটে জেলগেটে পৌঁছেই কারাগারের ভেতরে যান পরিবারের সদস্যরা। দুপুর সোয়া তিনটার দিকে মিরপুর ১১ নম্বরের সাংবাদিক কলোনির বাসা থেকে একটি মাইক্রোবাস (নম্বর: ঢাকা মেট্রো চ-১৩৭৯১৭) ও একটি জিপ গাড়িতে (নম্বর: ঢাকা মেট্রো চ-১৩৮৩৭৪) কারাগারের দিকে রওনা হন তারা।
এ দলে পরিবারের সদস্য, গ্রামের আত্মীয়-স্বজনসহ ২১ জন ছিলেন।
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বড় ছেলে হাসান ইকবাল ও বড় ভাই কফিলউদ্দিন ছাড়াও ছিলেন কামারুজ্জামানের স্ত্রী নূরুন্নাহার, মেঝো ছেলে হাসান ইমাম, মেয়ে আতিয়া নূর, দুই ভাতিজি, দুই ভাগ্নি রুখশানা জেরিন মুন্নি ও মলিসহ অন্যরা।
ফাঁসি কার্যকরের আগে দেশের এই শীর্ষ মানবতাবিরোধী অপরাধীর সঙ্গে এটাই তার পরিবারের সদস্যদের শেষ সাক্ষাৎ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৫
এমএইচপি/জেডএম