ঢাকা: আব্দুল কাদের মোল্লার মতো যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবরেও নীরব রয়েছে বিএনপি। ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে থাকা শরিক দল জামায়াতের ‘বড় দুঃসময়ে’ একেবারে প্রতিক্রিয়াহীনই থাকছে তারা।
শনিবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় একাত্তরের আলবদর কমান্ডার কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের এ পরিণতির পর আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায়ও বিএনপির কারও বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিগত দিনগুলোতেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা বাংলানিউজকে অফ দ্য রেকর্ডে এর আগে বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ সম্পর্কিত আলাপে যেতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছেন।
তাই নেতারাও ‘শ্যাম’ ও ‘কূল’ উভয় রক্ষায় মন্তব্য থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করেন।
কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের পর স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের একাধিক মুক্তিযোদ্ধা নেতার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বাংলানিউজ।
এমনিতেই গত কয়েকমাসের আন্দোলনে গ্রেফতার এড়াতে তাদের অনেকে ফোন নম্বর পরিবর্তন করেছেন। তার ওপর কেউ কেউ এমন সময়গুলোতে ফোন বন্ধ রাখেন সাংবাদিকদের প্রশ্ন থেকে বাঁচতেই।
এটিকে অবশ্য বিএনপি নেতাদের নিয়মিত আচরণ হিসেবেই দেখছেন অনেকে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, রায় বা রায় কার্যকর নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ‘অন দ্য রেকর্ড’ কিছুই বলতে রাজি নন তারা।
প্রসঙ্গত, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা-গণহত্যা, ব্যাপক নিধনযজ্ঞ, দেশান্তর, নির্যাতন, ধর্ষণ, ধর্মগত ও রাজনৈতিক কারণে নির্যাতন করে হত্যা, ষড়যন্ত্রের মতো বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর মধ্যে শেরপুরের সোহাগপুরে গণহত্যা-ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে।
তবে, কামারুজ্জামানসহ জামায়াতের অন্য নেতাদের বিচারের বিষয়ে প্রথম দিকে টুকটাক মন্তব্য করেছিল বিএনপি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার পর ‘বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানের হচ্ছে না’ বলে অভিযোগ ছিল তাদের। এ বিচার প্রক্রিয়াকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও নানা সময় ‘সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিযোগ এনেছেন।
তবে, তরুণ ভোটারদের কথা চিন্তা করে খালেদা জিয়া একসময় জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলা কমিয়ে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৫
এসকেএস/এইচএ/