ঢাকা: আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের প্রার্থীরা সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচারণার সমান সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এগিয়ে আসার কথাও বলেছেন।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রার্থীরা এসব দাবি জানায়।
এতে অংশ নিয়ে মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম বলেন, নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে আমার শঙ্কিত। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মতো যেন আগের রাত ৩ টা সময়েই ব্যালট বাক্স ভরে না যায়। তিনি নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় সন্তুষ্টির কথা বলেন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সুনির্দিষ্টভাবে তা উল্লেখ করতে সবার প্রতি আহ্বানও জানান। এ সময় তিনি নির্বাচনে সবার প্রতি সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মিলন বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে মানুষের মনে স্বস্তি থাকে। তাই পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নামানোর দাবি জানান তিনি।
মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীও একই যুক্তি দেখিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে মানুষের মনে স্বস্তি ও শান্তি থাকে। তাই যথেষ্ট পর্যবেক্ষণ করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মো. আবদুর রহমান বলেন, নির্বাচনের ৭ দিন আগে থেকে সেনাবাহিনী নামাতে হবে। এছাড়া গণমাধ্যমে সব প্রার্থীদের সমান প্রচারের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আবু নাসের হোসাইন বলেন, টিভিতে প্রচারণার ক্ষেত্রে সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। অন্যথায় যাদের কম সম্পদ আছে তারা পিছিয়ে পড়বে।
বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, প্রচারণার জন্য ৫টি এলাকার জন্য একটি করে অনুষ্ঠান টিভিতে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে সব প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি থাকবে। এছাড়া ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহ প্রদানের জন্য গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থাও করতে হবে।
আক্তারুজ্জামান আয়াতুল্লাহও গণমাধ্যমে প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিত প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরেন।
বাহারানে সুলতান পেশি শক্তি ও কালো টাকার প্রভাব কমাতে ভোটের আগে থেকে বিকাশ এর মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান বন্ধ রাখার দাবি জানান।
মেয়র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম নির্বাচনের ৩ থেকে ৫ দিন পূর্ব থেকে প্রার্থীদের পরিচিতি প্রচারের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
আবুল মনসুর নামের এক কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সব প্রার্থীকে এক মঞ্চে এনে পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠান বা সংলাপের আয়োজন করার প্রতি জোর দেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী জামাল উদ্দিনও সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে, ইসিকে প্রার্থীর পরিচিতি প্রচারের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি সেনা মোতায়েনের বিষয়েও জোর দেন।
এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্য প্রার্থীরা নির্বাচনের দলীয় পরিচয় বন্ধের উদ্যোগ নেওয়াসহ ভোটের ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টির প্রতি জোর দেন।
ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
এছাড়া অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, মো. শাহ নেওয়াজ, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলীসহ প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, ১৩ এপ্রিল, ২০১৫
ইইউডি/কেজেড