ঢাকা: হরতাল-অবরোধে মানুষ হত্যার পর খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাসাসের অনুষ্ঠানে দেওয়া খালেদা জিয়ার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
একইদিন বিকেলে পহেলা বৈশাখের উৎযাপন উপলক্ষে নয়াপল্টনে অনুষ্ঠান করে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন-জাসাস। ওই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বিএনপি সমর্থিত তিন মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নীরব বিপ্লব ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার নাই। তিনি গত তিনমাসে হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ হত্যা করে কীভাবে ভোট চান?। ৩ মাসের বেশি সময় ধরে পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যা করে, দিনের পর দিন হরতাল এবং অবরোধ ডেকে বাংলাদেশের মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে খালেদা জিয়া। আজ জাসাস আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানকেই কলঙ্কিত করেছেন।
এসময় তিনি অভিযোগ করেন, যারা উত্তর ও দক্ষিণে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন তারাই সহিংসতায় অর্থ যোগানদাতা। এদের পক্ষে ভোট চাইছেন খালেদা জিয়া।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাব মনে করেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার জন্য অন্যান্য দেশের মতো প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও প্রটোকল বাদ দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকা প্রয়োজন। একদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ তাদের সিনিয়র নেতারা প্রচারণা চালাবেন, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ অনেক সিনিয়র নেতা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয় না।
তিনি আরো বলেন, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে পুরো বাঙালি জাতি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং নৈরাজ্যকে পেছনে ফেলে নতুন বছর শুরু করার শপথ গ্রহণ করেছে। আর সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং নৈরাজ্যের নেত্রী খালেদা জিয়া বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন। এতে বছরের শুরুটাতেই তিনি কালিমা লেপন করেছেন।
এসময় হাছার মাহমুদ বলেন, আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ১৯৯৩ সালে বাংলা নতুন শতাব্দীকে বরণ করার জন্য (১৪০১ সাল) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে আওয়ামী লীগসহ সব প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত বেগম সুফিয়া কামালকে আহ্বায়ক করে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করেছিল।
কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান আখ্যা দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এটি আয়োজন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন। সেদিন আপামর জনতা পুলিশের টিয়ার গ্যাস এবং বাধা উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল। অথচ তিনি জানেন না, সম্রাট আকবরই রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথম বাংলাবর্ষকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে এটি পালনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘তিনি অতীতে যেভাবে মানুষের পাশে ছিলেন, ভবিষ্যতেও সেভাবে পাশে থাকবে’--- জনগণ এতে আতংকিত হয়েছে। কারণ, এতে তার নেতৃত্বে পরিচালিত পেট্রোল বোমা হামলা এবং বোমা হামলার কথাই মানুষকে মনে করিয়ে দিয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সুজিত রায় নন্দি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৫/আপডেটেড ২০৪৮ ঘণ্টা
এসইউজে/এসএইচ