ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের আর বেশি সময় নেই। দু’সপ্তাহেরও কম সময় পর এই সিটির সর্বোচ্চ পদ মেয়র নির্বাচনের ভোটযুদ্ধ শুরু হবে।
হেভিওয়েট দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইলিশ মাছ প্রতীকধারী সাঈদ খোকন ও বিএনপি সমর্থিত মগ প্রতীকধারী মির্জা আব্বাসের পক্ষে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সব পর্যায়ের প্রার্থীই।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকা দক্ষিণে সিদ্ধেশ্বরী ও ভিকারুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় প্রচারণা চালান সাঈদ খোকন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে শিক্ষার্থী এবং সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। অপরদিকে, লালবাগ, আজিমপুর, পলাশী ও কামরাঙ্গীর চর এলাকায় প্রচারণা চালান মির্জা আব্বাস পত্নী আফরোজা আব্বাস।
এছাড়া, আংটি প্রতীকধারী আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি খিলগাঁও ও বাসাবো এলাকায়; সোফা প্রতীকধারী জাতীয় পার্টি সমর্থিত দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, জুরাইন ও কদমতলী এলাকায়; ফ্লাক্স প্রতীকধারী চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত আবদুর রহমান খিলগাঁও, শাহজাহানপুর ও গোড়ান এলাকায়; লাউ প্রতীকধারী সাংবাদিক আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারী বাজার ও জিন্দাবাহার এলাকায় এবং বাস প্রতীকধারী শহীদুল ইসলাম ডেমরা, শনির আখড়া ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রচারণা চালান।
প্রচারণা ও মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাঈদ খোকন ভোটার ও নেতাকর্মীদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট গত তিন মাসে যে সহিংস তাণ্ডব চালিয়েছে তার জবাব ভোটের মাধ্যমে দিতে হবে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জনগণকে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার ব্যাপারে সচেতন করলেই তাদের হার নিশ্চিত।
সাঈদ খোকন আরও বলেন, যদি চার দশক পর স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার হয়, তবে এখনকার মানুষ পোড়ানোর জন্য কেন বিএনপির বিচার হবে না।
আফরোজা আব্বাসের প্রচারণাকালে তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সিটি কর্পোরেশন পরিচালনায় গঠিত ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’র আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, শিক্ষাবিদ আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার, ডা. রফিকুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
প্রচারণার ফাঁকে আফরোজা আব্বাস সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, মির্জা আব্বাসের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা, আস্থা এবং সম্মান দেখেছেন এবং তার প্রচারণায় যে সাড়া পেয়েছেন তাতে তিনি সত্যিকার অর্থে আশাবাদী। আব্বাসের প্রতি জনতার এ সমর্থনে উচ্ছ্বাস ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আফরোজা আব্বাস।
তিনি আরও বলেন, সব বাধা অতিক্রম করে ভোটাররা যদি নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে তবে মির্জা আব্বাসের জয়ের ব্যাপারে নিঃসন্দেহে আশাবাদী আমরা।
এছাড়া, প্রচারণা শেষে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন গোলাম মাওলা রনি, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, আবদুর রহমান, আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ ও শহীদুল ইসলাম।
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রনি জানান, তিনি ঢাকাবাসীকে একটাই কথা বলছেন, তিনি একজন বিশ্বস্ত সেবক হতে চান, নগরবাসীর হক নষ্ট করবেন না বলে ওয়াদা দিতে চান।
রনি মনে করেন, তিনি টক শো করেন এবং সংবাদপত্রে কলাম লেখেন বলে তার বিশেষ জনপ্রিয়তা আছে এবং প্রচারণায়ও সে জনসমর্থন দেখতে পাচ্ছেন। এই গ্রহণযোগ্যতাই তাকে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী করে তুলছে।
হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন জানান, যেখানেই তিনি প্রচারণায় যাচ্ছেন, সেখানেই তার দল জাপার জন্য মানুষের ভালোবাসা অনুভব করছেন। তিনি যে সড়কে, যে বাড়িতে, যে গলিতেই যাচ্ছেন উপচেপড়া ভিড় লেগে যাচ্ছে তাকে সমর্থন দিতে।
মিলন বলেন, আমি সবাইকে বলছি, যদি নির্বাচিত হই তবে রাজধানী ঢাকাকে আধুনিক শহর করার প্রচেষ্টা চালাবো। এই ঢাকার প্রধান প্রধান সমস্যা- যেমন রাস্তা প্রশস্তকরণ, বিদ্যুতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও ও পয়ঃনিষ্কাশনের মতো বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবো।
আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ বলেন, আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছি; সাড়াও পাচ্ছি ব্যাপক। আমি নগরবাসীকে বলছি, যদি নির্বাচিত হই, তবে তাদের একটি আধুনিক শহর উপহার দেবো।
আবদুর রহমান জানান, তিনি তার অবস্থান থেকে মানুষের যে ভালোবাসা পাচ্ছেন তাতে মুগ্ধ। তিনি ভাবতেও পারেন না সাধারণ ভোটাররা তাকে দেখে এভাবে ছুটে আসবে। জয়ের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আশাবাদী আবদুর রহমানও।
বুধবার দুপুরেই সংবাদ সম্মেলন করে ইশতেহার ঘোষণা করা শহীদুল ইসলাম বলেন, তিনি ইশতেহারে যেভাবে সুন্দর নগরী, কর্মসংস্থান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের অঙ্গীকার দিচ্ছেন তেমনি প্রচারণায়ও জনগণের কাছে সেসব বিষয় তুলে ধরছেন। জনগণ তার প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে বিধায় তিনিও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৫
এমএম/এইচএ/