ঢাকা: সিটি নির্বাচনে উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ১২ দফায় ৮৩টি প্রতিশ্রুতির কথা জানালেন নিজের নির্বাচনী ইশতেহারে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় তেজগাঁও লিংকরোডের রেগনাম টাওয়ারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ইশতেহার প্রকাশ করেন।
খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, যানজট নিরসন ও যানবাহন সুবিধা, নগর পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও জনস্বাস্থ্য, ডিজিটাল সেবা, জননিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, নগর প্রশাসন-এই ১২টি ক্ষেত্রে মোট ৮৩ পদক্ষেপে ঢাকাকে ‘আদর্শ’ শহরে পরিণত করার কথা দেন এ প্রার্থী।
কিছু ক্ষেত্রে অন্য দেশের উদাহরণ ধরে কাজ করার কথা বলেন তাবিথ। জাপানের মতো ‘নগরকৃষি’ ব্যবস্থা চালুর ইচ্ছার কথা বললেন। শেয়ার মার্কেটের একটি ডিসপ্লে তিনি উত্তরের দিকেও স্থাপনের উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। যাতায়াত ব্যবস্থায় সবার সুবিধা দেওয়ার চেষ্টাসহ আরও কিছু বিষয়ে নতুনত্ব দেখানোর কথা বলেন তাবিথ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে আমি জনগণের মেয়র। সে হিসেবেই কাজ করবো। ব্যবসায়ী হিসেবে অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি, আয় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে সিটিতে। সে সুযোগটি কাজে লাগাবো।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকেই আমরা বিচ্ছিন্ন করতে চাই না ঢাকা থেকে। এখানে যারা আছেন তারা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বাস করবেন। বিনামূল্যে চিকিৎসা, যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো করা যাতে বস্তির মানুষগুলোও ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারেন সে সব ব্যবস্থা নেব। আমরা হয়তো এখনো ভাবতে পারছি না যে, সবাই সহাবস্থান সম্ভব। সেটিই করতে হবে।
ভিন্ন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাদের মতো আমিও ক্ষিপ্ত। ঢাকাতে বড় হয়েছি। অনেক কিছু এ নগরবাসী পায়নি। তাই নিজেই এগিয়ে এসেছি। ২০০৯ সালের পর জনগণ তেমন কোন প্রতিনিধি পায়নি, এবার পাবে। সবার চাওয়াগুলো পূরণ হবে।
তাবিথ বলেন, আমি বস্তিসহ বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল খেলে বড় হয়েছি। সবার সঙ্গে বড় হয়েছি। তাই বস্তির ছেলেকে কোলে নেওয়া নির্বাচনী কৌশল নয়।
তিনি বলেন, আমি যদি রাজনীতিতে নতুন হই, তাহলে কেন ২৫ ডিসেম্বর রাতে আমাকে আটক করা হল?
সিটি মেয়র যে দলের থাকেন, সে দলের লোকরাই টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকে। এ থেকে বের হতে পারবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, জোনাল অফিসের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী সব হবে। পাবলিক ডোমেইনে সব তথ্য রাখা থাকবে। তাই জনগণ সচেতন থাকবে এসব বিষয়ে। এর আগে সাবেক মেয়ররা হয়তো ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা অন্তত উদ্যোগটা নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে মত বিনিময় করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
ভিন্ন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনীতির ইস্যু কেন করা হবে? তাদের প্রতি সম্মান রেখে আমরা কাজ করবো।
ইশতেহার ঘোষণা শেষে সবার দোয়া চান তাবিথ।
তাবিথের পরই বক্তব্য রাখেন ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’ এর আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ।
এমাজউদ্দিন বলেন, এ প্রার্থী তরুণ প্রার্থী। উচ্চশিক্ষিত প্রার্থী। ৩০ বছরের নিচে যারা প্রার্থী সম্ভাবনাময় তরুণ ভোটারদের পছন্দের হবেন তারা। ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতি দেবেন, সেসব রক্ষা করতে তাবিথ চেষ্টা করে যাবেন।
ছোট ছোট সমস্যাগুলোকে কীভাবে সমাধান করা যায়, সেগুলো নিয়ে তাবিথের চিন্তা-ভাবনার প্রশংসা করেন তিনি।
ইশতেহার ঘোষণার আগে ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’ এর সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, এ প্রার্থীকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। বিশ্বাস করি, এ প্রার্থী নির্বাচিত হলে একটি পরিচ্ছন্ন রাজনীতির পরিবেশ পাব। আমরা সুন্দর শহর দেখতে চাই।
তিনি বলেন,নগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে পাব বলে বিশ্বাস করি। নীরব বিপ্লব দেখবো বলে বিশ্বাস করি।
মওদুদ বলেন, তাবিথের পরিবারের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক আমার। তাবিথকে তরুণ, সৎ, নতুন ও উদীয়মান তরুণ হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা,এপ্রিল ১৬, ২০১৫
এসকেএস/আরআই
** চলছে তাবিথের ইশতেহার ঘোষণার আয়োজন