ঢাকা: আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য অগ্নিপরীক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা উত্তরে বিএনপি সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত সমন্বয় কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, এই নির্বাচন সরকার এবং ইসির জন্য অগ্নিপরীক্ষা। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে দেশে গণতন্ত্র আছে কিনা, ইসি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে কিনা। আমরা বিশ্বাস করি, এই সিটি নির্বাচনে ইসি যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তাহলে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট সমর্থিত সব প্রার্থীই বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনকে জোরদার করতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট অংশ নিয়েছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমরা নির্বাচনে আছি এবং শেষ পর্যন্ত থাকবো। আমাদের বিশ্বাস, এ সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে, সেসবের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে নির্বাচনে।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে না অভিযোগ করে বিএনপির ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মওদুদ আহমদ বলেন, আজই একটি পত্রিকায় উঠেছে, আওয়ামী লীগের ১৬ জন প্রার্থীর মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো দূরের কথা, ন্যূনতম সুযোগ সুবিধাটুকু বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা পাচ্ছেন না। গতকালও ঢাকা উত্তরের কাউন্সিলর প্রার্থী কাওসার আহমেদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সর্বত্র আমাদের প্রার্থী ও সমর্থকদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হুমকি দিচ্ছে, হয়রানি করছে।
প্রার্থী সমর্থনের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, কিছু কিছু জায়গায় বিএনপি ও জোটের নামে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, দল ও জোটের পক্ষ থেকে যাদের সমর্থন দেওয়া হয়েছে, যাদের নাম সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তারাই আমাদের সমর্থিত প্রার্থী। অন্যদের ওইসব প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে।
প্রচারণায় বাধা দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করছেন কিনা জানতে চাইলে মওদুদ আহমদ বলেন, অবশ্যই আমরা লিখিত অভিযোগ করছি। তবে নির্বাচন কমিশনের কি চোখ, কান নেই? তারা কি পত্র-পত্রিকা পড়ে না? নির্বাচন কমিশন আমাদের সঙ্গে বৈষ্যমমূলক আচরণ করছে।
মওদুদের অভিযোগ, প্রতিদিন ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। আজকেও (শুক্রবার) একজন মেয়র প্রার্থী মসজিদে অনুদান দিয়েছেন, এটা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল।
এ সময় উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, গত শুক্রবার থেকে আমি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। জনগণ ভোটের অপেক্ষায় আছে, আমাদের জোটকে সমর্থন দেওয়ার জন্য। দলের সকলের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, যে কয়টা দিন আছে, আমরা যেন সম্মিলিতভাবে কাজ করি। আমি সকলের সমযোগিতা চাই।
ঢাকা উত্তরে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের জন্য গঠিত সমন্বয় কমিটির প্রথম এ সভায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কর্মকৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সমন্বয় কমিটির এই সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সদ্য কারামুক্ত যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও তার মা নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আখতার মুন্নী, বিএন কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ, শাহ আবু জাফর, মনিরুল হক চৌধুরী, আবুল হোসেন, হবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আসাদুল করিম শাহিন, সুলতানা আহমেদ, মো. সাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
সভায় জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম, জাগপা‘র সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনডিপি’র খন্দকার গোলাম মুর্তজা, খেলাফত মজলিশের সৈয়দ মজিবুর রহমান, মাওলানা শফিকউদ্দিন, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, এলডিপি‘র যুগ্ম-মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, এপ্রিল১৭ ২০১৫/আপডেট ১৮০৮ ঘণ্টা
এজেড/এইচএ/