ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

সিটি নির্বাচন

তাবিথের ব্যস্ত-পয়মন্ত শনিবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
তাবিথের ব্যস্ত-পয়মন্ত শনিবার ছবি: দীপু মালাকার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সবদিক থেকে বিচার করলে প্রচারণা শুরুর পর শনিবারই সবচেয়ে পয়মন্ত দিন কাটালেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল। সকাল থেকেই ভোটের মাঠ গরম করতে বের হন, কিন্তু দ্বিতীয় বেলায় নগরবাসীকে চমকে তার পক্ষে প্রচারে নেমে পড়লেন স্বয়ং বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।



শনিবার (১৮ এপ্রিল) নিশ্চয়ই তিনি মনে রাখবেন আজীবন। পহেলা এপ্রিলের পর জীবনের সুখ-স্মৃতির অংশ হয়ে থাকবে এদিনটি। সেদিন খালেদা তাকে সরাসরি পরিচয় করিয়ে দেন নিজেদের প্রার্থী হিসেবে, আর শনিবারতো মাঠেই নামলেন।
 
দিনের শুরুতে তাবিথ যান গাবতলী-মিরপুর এলাকায় নিজের প্রচারে। সেই খবর চাউর হতে না হতেই জানা গেল তার পক্ষে ভোট চাইতে নেমেছেন খালেদা, ২০ দলীয় জোট নেতা। আভিজাত্যের মোড়কবন্দি খালেদা নিজের হাতে লিফলেট বিতরণ করে ভোট চাইলেন তাবিথের পক্ষে। বলাই বাহুল্য, এ প্রার্থীর অনেকখানি কাজ করে দিলেন তিনি কয়েক ঘণ্টায়।

তাই প্রচারণার নবম দিনটিকে পয়মন্ত মানছেন তাবিথের কাছের মানুষরা। তারা বলছেন, তাবিথ এক মাস গিয়েও যে প্রচার পাওয়ার কথা নয়, খালেদা কিছু সময়েই সেটি করে দিলেন।

তিনি সকালে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দ্রুত ঢুকে পড়েন ভেতরের গলিগুলোতে।

বড়বাজারে গিয়ে মানুষকে তিনি বলেন, আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে, আপনার ওয়ার্ড ও মহল্লায় খানা-খন্দক (গর্ত) থাকবে না। পয়ঃনিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বল্প আয়ের মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। পাবেন একটি নির্মল বায়ু, শব্দ দূষণমুক্ত সবুজ ঢাকা।

উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের বিপুল সমর্থন পাচ্ছি। তবে নেতাকর্মীরা এখনও গুম-খুন আতঙ্কে গণসংযোগে বের হতে পারছেন না। গুমের ভয়ে অনেক কিছুই বলতে পারি না।

তাবিথ বাগবাড়ি, আনন্দ নগর, বড় বাজার, দারুস সালাম, কলোনি বাজার, বসুপাড়া বাজার, লালকুটি বাজার এলাকার ছোট ছোট গলিতেও গণসংযোগ করেন। নারী ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে বলেন, আমি আপনাদের ছেলে-ভাই, পর কেউ নই।
 
তার সঙ্গে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী বদি-উজ-জামানসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বড় বাজার এলাকায় গণসংযোগে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শুধু সেনাবাহিনী নয়, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে যা যা করা প্রয়োজন সবকিছু নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন মুখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের কথা বললেও বাস্তবে তার কোনো ফলাফল পাচ্ছি না।

বৈশাখী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের সম্ভ্রমহানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাবিথ বলেন, সরকার এতোদিনেও কেন ওই নরপশুদের গ্রেফতার করতে পারে নি? অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
 
দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আইয়াল ভোট চাইতে মিরপুর ৭, ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে যান।

তাবিথের জন্য শুধু খালেদা নন, যথারীতি অন্যদিনের মতো তার মা নাসরিন ফাতেমা আউয়ালও মাঠে নামেন।

এদিন বেলা ১১টায় তিনি মিরপুর-১ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর এলাকার কাঁচাবাজার, নবাববাগ, বেড়িবাঁধ এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সেলিমা রহমান নাসরিন ফাতেমার সঙ্গে ছিলেন।

সেলিমা রহমান ভোটারদের উদ্দেশ্য বলেন, সারা বিশ্বে এখন তারুণ্যের জয়গান। তাই আমরা আপনাদের এমন একজন সৎ, যোগ্য তরুণ প্রার্থী দিয়েছি, যাকে নির্বাচিত করলে নগরবাসী সর্বোচ্চ সেবা পাবে।

নাসরিন আউয়াল বলেন, তাবিথ যেমন আমার সন্তান তেমনি আপনাদেরও সন্তান। তাবিথকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন। কথা দিচ্ছি আপনাদের দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে তাবিথ।

এরপর প্রতিদিনের মতোই তাবিথ যোগ দেন বেসরকারি টেলিভিশনের টক-শোতে। সেখানেও তিনি প্রার্থী হিসেবে নিজের পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তি করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
এসকেএস/এটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।