ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনী প্রচারে ছাত্রলীগের কালো পতাকা প্রতিবাদ কর্মসূচি নতুন ইতিবাচকতার জন্ম দিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম না দিয়ে বিশৃঙ্খলা পরিহার করে সহনশীল গণতান্ত্রিক উপায়ে তারা এই প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে রোববার দ্বিতীয় দিন নির্বাচনী প্রচারে নামেন খালেদা জিয়া। বিকেলে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরে তিনি নির্বাচনী প্রচারে গেলে জসীমউদ্দিন রোডের মোড়ে ছাত্রলীগ, নেতাকর্মীরা কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় ও মানবন্ধন করে। এসময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরাও তাদের সাথে যোগ দেয়।
খালেদা জিয়ার সেখানে যাওয়ার খবর পেয়ে আগে থেকেই তারা কালো পতাকা নিয়ে এবং হাতে ও মাথায় কালো কাপড় বেঁধে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন তৈরি করে।
খালেদা জিয়া গাড়ি বহর নিয়ে সেখানে গেলে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকে: ‘ছি, ছি, খুনি খালেদা/ লজ্জায় বাঁচি না’, ‘আমার ভাই মরলো কেন/ খুনি খালেদা জবাব চাই। ’
এরপর হাউজ বিল্ডিং মোড়েও খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর যাওয়ার সময় তারা কালো পতাকা নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগের বিরুদ্ধে কখনও কখনও কিছু অভিযোগ উঠে থাকে। কিন্তু প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কর্মসূচির বিরুদ্ধে তাদের এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানোর সময় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার অবতারণা হয়নি। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগকর্মীরা একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ও সহনশীল গণতন্ত্রচর্চার দৃষ্টান্তই তুলে ধরেছে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
গত জানুয়ারি থেকে টানা তিন মাসের বেশি সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ-হরতালে সহিংসতার মাধ্যমে এবং বাসে-ট্রাকে পেট্রোল বোমা মেরে দেড় শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নেমে জনগণের কাছে ভোট চান। তার আসা-যাওয়ার পথে এই সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে তাকে কালো পতাকা দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ।
রোববার উত্তরায় ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই কালো পতাকা বিক্ষোভ করেন। তবে এ সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি সেখানে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়া গত তিন মাসের বেশি সময় দেশের মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। দেড় শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছেন। এখন তিনি কোন মুখ নিয়ে মানুষের কাছে ভোট চাইতে যান? ভোট চাওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার তার নেই। তিনি সেখানে যাবেন সেখানেই আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ জানাবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৫
এসকে/জেডএম/জেএম