ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

কারো কথাই শুনলেন না এরশাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫
কারো কথাই শুনলেন না এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: ৭ মাস পর ডেকেছিলেন কথা শুনবেন বলে। কিন্তু কারো কথাই শুনলেন না জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

সে কারণে প্রেসিডিয়ামের সভায় যোগ দিলেও ক্ষোভ নিয়েই ফিরে গেলেন নেতারা। বাইরে বেরিয়ে কেউ কেউ দল ছাড়ার কথাও জানিয়ে দিয়ে গেলেন কর্মীদের।

এমন তথ্যই পাওয়া গেছে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের বৈঠক শেষে।

দীর্ঘ ৭ মাস পর বুধবার(২২ এপ্রিল’ ২০১৫) সকাল ১১ টায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়ামের বৈঠকটি হয়। বৈঠকে ৪১ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের মধ্যে ১৪ জন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ৬ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। বৈঠকটি ‍মাত্র ১৩ মিনিট স্থায়ী হয়।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, শুরুতেই এরশাদ সিটি করপোরেশন প্রসঙ্গ তোলেন। এরশাদ ডিসিসির নির্বাচনী প্রচারণায় হতাশা ব্যক্ত করেন। এরশাদ বলেন, ডিসিসি উত্তরের প্রার্থীর অবস্থা ভালো নয়। তুলনামুলক দক্ষিণের প্রার্থী ভালো তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন। নেতা-কর্মীদের দক্ষিণের প্রার্থীর পক্ষে জোর প্রচার চালানোর আহ্বান জানান।
 
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন(চসিক)নির্বাচন সমন্বয় করার জন্য প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের ও চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানাকে চট্টগ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দেন এরশাদ।
 
এ সময় চসিকে জাতীয় পার্টি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ উঠে কথা বলতে চান। সোলায়মান শেঠ বলেন, আপনি আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আর আপনার মহাসচিব চট্টগ্রামে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ.........। এ কথা বলতেই তাকে থামতে বলেন এরশাদ।
 
থামিয়ে দিতে চাইলেও বারবার বলার চেষ্টা করেন সোলায়মান আলম শেঠ। পরে তাকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন এরশাদ।

এরপর অন্য একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলতে চাইলে তাকেও থামিয়ে দেন এরশাদ। মাত্র ১৩ মিনিটে সভা শেষ করে বেরিয়ে যান এরশাদ।
 
ক্ষুব্ধ সোলায়মান আলম শেঠ বাইরে বেরিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বলেন, কোন কথাই যখন শুনবেন না, তাহলে কেন ডেকেছিলেন আমাদের। আমার বোধগম্য হয় না। এ রকম হলে এই দলেই থাকব না।
 
বৈঠকে অংশ নেন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মসিউর রহমান রাঙ্গা, আবুল কাশেম, গোলাম কিবরিয়া টিপু, চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সাইদুর রহমান টেপা, এসএম ফয়সল চিশতী, সুনীল শুভরায়, সোলায়মান আলম শেঠ, আজম খান, তাজ রহমান।
 
বৈঠকে এমপিদের মধ্যে নুরুল ইসলাম ওমর, নুরুল ইসলাম তালুকদার, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, মো: নোমান, ইঞ্জিনিয়ার মামুনুর রশীদ।

 প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে সোলায়মান আলম শেঠকে সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টি। কিন্তু জাতীয় পার্টির মহাসচিব চট্টগ্রামে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজম নাজিরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রচারণার ভিডিও এখন এরশাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

মহাসচিবের এই ভূমিকায় দলের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। নিষ্ক্রিয় থাকা মহাসচিব বিরোধী গ্রুপটি সরব হয়ে উঠেছে। তারা একযোগে মহাসচিবকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছে। এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল বৈঠক। তাই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে ঢাকায় এসেছিলেন সোলায়মান আলম শেঠ। বৈঠক শেষে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে ফেরেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫
এসআই/এনএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।