ঢাকা: মানসিক বিষন্নতা সহ্য করতে না পেরে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এনায়েত কবির চঞ্চল আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করেছেন তার স্ত্রী নাজনীন জাহান।
বুধবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডি-১ নম্বর রোডের ৩৯ নম্বর বাসায় চঞ্চলের স্ত্রী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ দাবির কথা জানা যায়।
এর আগে ওই বাসার গ্যারেজের শৌচাগারের ভেতর থেকে চঞ্চলের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
চঞ্চলের স্ত্রী নাজনীন জাহান বাংলানিউজকে জানান, দুই মাস আগে (১৪ ফেব্রুয়ারি) চঞ্চলের মা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি মানসিক সমস্যায় ছিলেন। এর আগেও তার কিছুটা মানসিক সমস্যা ছিলো।
রাজনৈতিকভাবে তিনি চাপের মধ্যে ছিলেন বলেও জানান চঞ্চলের স্ত্রী। মানসিক সমস্যার জন্য ধানমণ্ডি-২৭ নম্বরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে অধ্যাপক ডা. এম এ হামিদের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন চঞ্চল। ৬ মাস ধরে নিয়মিত তার চিকিৎসাও চলছিলো।
তিনি বলেন, আমার শাশুড়ি মারা যাওয়ার পর থেকে তার মানসিক সমস্যা বেড়ে যায়। তিনি (চঞ্চল) কারো সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করতেন না। সব সময় চিন্তাগ্রস্ত থাকতেন। বেশির ভাগ সময় চুপচাপ সময় কাটাতেন।
চঞ্চলের চাচাতো ভাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাড়ির পঞ্চম তলায় সপরিবারে বসবাস করতেন চঞ্চল। পরিবারে স্ত্রীসহ তিন ছেলে ও তার বাবা একই সঙ্গে থাকতেন।
তিনি বলেন, বড় ছেলে তন্ময় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্র, মেঝো ছেলে আফনান এ লেভেলের শিক্ষার্থী এবং সবার ছোট তাহমিদ অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। নিজের নিরাপত্তার জন্য চঞ্চল সার্বক্ষণিক একটি পিস্তল সঙ্গে রাখতেন বলেও জানান তিনি।
ওই বাসার নিরাপত্তারক্ষী জিল্লুর বাংলানিউজকে জানান, চঞ্চল স্যার আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাসার বাইরে যান। খুব বেশি হলে ৫ থেকে ১০ মিনিট পর তিনি আবার বাসায় ফিরে আসেন। কিছুক্ষণ পর গ্যারেজে থাকা গাড়িচালক এসে আমাদের জানান, টয়লেটের দরজা আটকানো, কোনোভাবেই খুলছে না।
জিল্লুর জানান, টয়লেটের দরজা না খুললে বাড়ির দারোয়ান আনিস টয়লেটের ওপর দিয়ে উঁকি দিলে তাকে পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি বাড়ির কেয়ারটেকার সুজিত দত্তকে জানানো হয়।
তিনি বলেন, পরে আনিস টয়লেটের ওপর দিয়ে উঠে টয়লেটের দরজা খুলে দিলে চঞ্চল স্যারকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে বিষয়টি থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা সেখানে ছুটে যাই। মরদেহের পাশে একটি পয়েন্ট-২২ বোল্ড পিস্তল (অস্ত্র) পাওয়া যায়। পিস্তলটি চঞ্চলের নিজ নামে নিবন্ধিত ছিলো।
চঞ্চলের মাথার ডান দিকে একটি গুলির চিহ্ন দেখা যায় বলেও জানান তিনি। ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দয়ের করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫
এসজেএ/টিআই