ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

চাঁদাবাজি মামলা

ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ঢাকায় গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৫
ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ঢাকায় গ্রেফতার মোকাররম বাবু

ফরিদপুর: চাঁদাবাজির মামলায় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোকাররম মিয়া বাবুকে ঢাকার বেইলি রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে নয়টায় রমনা থানা পুলিশ মোকাররম বাবুকে গ্রেফতার করে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রমনা থানায় নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছে পুলিশ। উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা অনুভব করায় তাকে বেলা ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার একটি চাঁদাবাজির মামলার আসামি মোকাররম মিয়া বাবুকে গ্রেফতারের জন্য সেখানকার গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। ওই থানার রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। ফরিদপুর থেকে পুলিশের একটি দল ঢাকায় আসছে। তারা এলে আমরা আসামিকে তাদের কাছে হস্তান্তর করবো।

গত রোববার (১৯ এপ্রিল) রাতে আওয়ামী লীগ নেতা বাবু ও এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলা দু’টি করেন যথাক্রমে শহর যুবলীগের সভাপতি বদরপুর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও শহরের লক্ষ্মীপুরের ঠিকাদার সালেহ আহমেদ।

সাজ্জাদ হোসেন বরকত তার মামলায় মোকাররম মিয়া বাবুর বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছেন। এজাহারে বলা হয়, ফরিদপুর সরকারি তিতুমীর বাজারের নির্মাণ কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য মোকাররম তার কাছে ৪০ লাখ টাকা চাঁদা চান। তিনি ২০ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। বাকি ২০ লাখ টাকার জন্য মোকাকররম মিয়া তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

ঠিকাদার সালেহ আহমেদ তার মামলায় জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (রাজনৈতিক) সত্যজিৎ মুখার্জীর বিরুদ্ধে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন। এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য সত্যজিৎ তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি বাধ্য হয়ে তাকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছেন।

সাজ্জাদ হোসেন জানান, তিনি তিতুমীর বাজারে এসে মোকাররমকে চাঁদা হিসেবে ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন। সালেহ আহমেদ বলেন, সত্যজিৎ আমার চেম্বারে এসে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন।

২০০৯ সালে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করার পর সত্যজিৎকে এপিএস নিযোগ করেন। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৬ এপ্রিল তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে জেলা ছাত্রলীগ তাকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করে।

অন্যদিকে ফরিদপুরে মন্ত্রীর প্রতিনিধি হয়ে সব কাজের তদারকি করতেন মোকাররম। কিন্তু মন্ত্রী ও তার ভাই ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য সম্বলিত দু’টি ভিডিও ক্লিপ মন্ত্রীর হস্তগত হওয়ায় গত ১৩ এপ্রিল মোকাররমকে তদারকি করার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন মন্ত্রী।

এদিকে মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) থেকে ফরিদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ওই দুই নেতার নামে বিভিন্ন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে প্রচারে ফরিদপুরবাসী লিখে হাজার হাজার পোস্টার লাগানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৫
আরকেবি/আইএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।