ঢাকা: একদিন বিরতি দিয়ে ষষ্ঠ দিনের মতো নির্বাচনী প্রচারণায় বের হলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটের পর বিএনপি প্রধান তার গুলশানের বাসা থেকে বের হন।
আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইতে গত শনিবার (১৮ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন খালেদা জিয়া। পরদিন রোববারও (১৯ এপ্রিল) নির্বাচনী প্রচারণা চালান তিনি। সোমবার (২০ এপ্রিল) টানা তৃতীয় দিনের মতো প্রচারণায় বেরিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তার গাড়ি বহর হামলার শিকার হয়। এরপর মঙ্গল ও বুধবারও (২১ ও ২২ এপ্রিল) যথাক্রমে ফকিরাপুল ও বাংলামোটরে হামলার শিকার হয় খালেদার গাড়িবহর। বাংলামোটরে হামলায় খালেদাকে বহনকারী ও তার সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেসব কারণ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) মাঠে নামেননি বিএনপি চেয়ারপারসন।
শুক্রবার ষষ্ঠ দিনের মতো মাঠে নেমে যথারীতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) দল সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) মির্জা আব্বাসের পক্ষে ভোট চাইছেন বিএনপি প্রধান।
বিগত দিনের হামলার প্রেক্ষিতে ষষ্ঠ দিনের মতো ভোটের মাঠে রওয়ানা দেওয়ার আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সের গাড়িতে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার রাখতে দেখা যায়।
বিকেলে বের হয়ে খালেদার গাড়ি বহর তার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে দিয়ে নতুন বাজার হয়ে কুড়িল বিশ্বরোডের দিকে এগিয়ে যায়। তার গাড়ি বহরের সামনে-পেছনে রয়েছে ছাত্রদল-যুবদলসহ নেতাকর্মীদের মোটর সাইকেল বহর।
কুড়িল ফ্লাইওভার পর্যন্ত গিয়ে আবার উল্টো দিকে রওয়ানা হয় খালেদার গাড়িবহর। এরমধ্যে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার কিছু আগে খালেদা জিয়া নর্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নামেন। সেখানে প্রায় ১০ মিনিট ডিএনসিসিতে মেয়র প্রার্থী তাবিথের পক্ষে গণসংযোগ করেন তিনি।
এসময় সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি বলেন, এ সরকার আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চাইছে। সরকারদলীয় প্রার্থীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন তাদের ইচ্ছে মতো সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত দিয়েও আবার উইথড্রো (প্রত্যাহার) করে নিয়েছে।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসিকে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীদের ভোট দিলে দেশের মতো ঢাকার নিরাপত্তাও ভেঙে পড়বে। দেশের মা-বোনদের ইজ্জতহানি হবে।
তিনি সরকারকে ‘জালিম’ বলে অভিযুক্ত করে বলেন, টিএসসিতে মা-বোনদের ওপর যে ঘটনা ঘটালো তাদের গুণ্ডা বাহিনী, এর এখনও কোনো বিচার হয়নি এখনও। আমি যেন নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে না পারি এবং আমাদের প্রার্থী যেন জয়ী হতে না পারে, সেজন্য আমার গাড়িবহরেও হামলা চালিয়েছে সরকারের গুণ্ডা বাহিনী।
এই সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারছে না, জননিরাপত্তা বিধানে বিএনপির প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নর্দায় গণসংযোগ শেষে খালেদা আবারও তার গাড়িতে চেপে বসেন। এরপর বিএনপি প্রধানের গাড়ি বহর নতুন বাজার, বাড্ডা লিংক রোড হয়ে গুলশান এক নম্বরের দিকে এগিয়ে যায়। গুলশান এক নম্বর থেকে বিএনপি প্রধানের গাড়ি গুলশান দুই নম্বর চত্বর হয়ে বনানী কাঁচাবাজারের দিকে যায়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর খালেদা জিয়ার বহর বনানীর ইউএই মৈত্রী কমপ্লেক্সের সামনে পৌঁছায়। সেখানে নেমে খালেদা মৈত্রী কমপ্লেক্সে ঢোকেন এবং বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথের পক্ষে জনে জনে ভোট চান।
১৫ মিনিটের মতো মৈত্রী কমপ্লেক্সে প্রচারণা চালিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ৮টার মিনিট কয়েক আগে মহাখালীর দিকে রওয়ানা হন। তবে, তার গাড়িবহর মহাখালী ফ্লাইওভার হয়ে জাহাঙ্গীর গেটের সামনে থেকে ঘুরে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচ দিক দিয়েই সামনে এগিয়ে যায়।
বহরে খালেদার সঙ্গে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৫/আপডেট ১৭০৮ ঘণ্টা/আপডেট ১৭৪৬ ঘণ্টা/আপডেট ১৮১৮ ঘণ্টা/ ১৮৫০ ঘণ্টা/আপডেট ১৯৪৩ ঘণ্টা/আপডেট ২০০১ ঘণ্টা/আপডেট ২০৪০ ঘণ্টা
এসজেএ/এইচএ/
** ফের ভোটের মাঠে নামছেন খালেদা