ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

দুর্নীতিমুক্ত নগর গড়ার প্রতিশ্রুতি মেয়র প্রার্থীদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৫
দুর্নীতিমুক্ত নগর গড়ার প্রতিশ্রুতি মেয়র প্রার্থীদের ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দুর্নীতিমুক্ত ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নগর ভবন গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীরা। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের আয়োজনে শনিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে ইস্টওয়েস্ট মিডিয়া সেন্টারে ‘কেমন মেয়র হবো’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ প্রতিশ্রুতি দেন তারা।


 
বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের সঞ্চালনায় বৈঠকে বক্তব্য রাখেন স্থপতি, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ এবং প্রার্থীরা।
 
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচিত মেয়রদের মধ্যে পেশাদারিত্ব থাকতে হবে। নির্বাচনী তফসিলে থাকা ২৮টি দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন যেন, মেয়রসর্বস্ব না হয়। বরং লোকাল সেলফ গর্ভনমেন্ট হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।
 
স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ঢাকার চারপাশে নদী রয়েছে। এগুলোর পাড় ঘিরেই নগরকে আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব। কিন্তু এগুলো নদী মন্ত্রণালয়ের অধীনে।
 
তিনি বলেন, এখন ঢাকাকে একটি জায়গায় চিন্তা করতে হবে। শহরের একটি অংশে যদি মশা নিধনের জন্যে ওষুধ দেওয়া হয়, আবার অন্যাংশে মশার বৃদ্ধি হয়, তবে সেটা হবে ভয়াবহ। ফলে দুই সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে।
 
গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকা উত্তরের আওয়ামী লীগ সমর্থিত টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক বলেন, এটি জাতীয় নির্বাচন নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তৈরি করে সুন্দর নগড় গড়তে কাজ করতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের একটি অ্যাকাউন্টিবিলিটি তৈরি করতে হবে।
 
ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার বিষয়টি মূল্যায়নের জন্যে ভোটরদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
 
বৈঠকে বাস প্রতীকের উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সিটি কর্পোরেশন গড়তে সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় গড়তে হবে। এখানে সম্মিলিত ঢাকায় সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
 
মানুষ সরকারবিমুখ হয়ে আসন্ন নির্বাচনে তাকে ভোট দেবেন বলে মনে করেন তাবিথ আউয়াল নিজে।
 
চরকা প্রতীকের উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী বাহাউদ্দিন আহমদ বাবলুও দুর্নীতিমুক্ত সিটি কর্পোরেশন গড়ার অঙ্গীকার করেন। আসন্ন নির্বাচনের জন্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবি জানান তিনি।
 
নগরের একজন বাসিন্দা হিসেবে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন, সেগুলো দূর করার চেষ্টা করবেন বলে জানান একই সিটি কর্পোরেশনের চরমোনাইর পীরের দল ইসলামী আন্দোলনের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ফজলে বারী মাসউদ। শহরে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলেন তিনি।
 
ঢাকা দক্ষিণে ইলিশ মাছ প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন বলেন, সরকারের অন্তত ২০টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনকে কাজ করতে হয়। এ বিষয়ে সকলের সঙ্গে সমন্বয় থাকতে হবে। শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে তিনি বর্তমানের যানজটকে দায়ী করছেন।
 
টেলিস্কোপ প্রতীক নিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত মেয়র প্রার্থী জোনায়েদ সাকি বলেন, নবনির্বাচিত মেয়রদের তদারক করবে জনগণ। শহরে ব্যক্তিগত পরিবহনের চেয়ে মানসম্মত গণপরিবহন বৃদ্ধির ওপর জোর দেবেন তিনি।
 
জাসদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নাদের চৌধুরী দলীয় প্রভাবমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত সিটি কর্পোরেশন গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
 
সিপিবি-বাসদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হাতি প্রতীকের আব্দুল্লাহ আল কাফী বলেন, ব্যবসায়ীদের হাতে এ নগর নিরাপদ হবে না। মেয়রদের হাতে ক্ষমতা না রেখে কাউন্সিলরদের হাতেও ছড়িয়ে দিতে হবে।
 
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাচিত আমলা হওয়া যাবে না। সিটি কর্পোরেশনের বাইরেও অনেক স্থান রয়েছে, যারা সব সুবিধা ভোগ করলেও ট্যাক্স দেয় না। এসব নিয়ে ভাবতে হবে।
 
ঢাকা দক্ষিণের টেবিল প্রতীকের সিপিবি-বাসদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, এখানে সিটি কর্পোরেশনের বাজেটের ৫০ শতাংশই দুর্নীতিতে ব্যয় হয়। এ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
 
দক্ষিণের বাস প্রতীক নিয়ে জাসদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তার পোস্টার ও নির্বাচনী প্রচারণার মাইক কেড়ে নিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়দানকারীরা।
 
গোলটেবিল বৈঠকে সমাপনী বক্তব্য দেন কালের কন্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।
 
বাংলাদেশ সময় ১৫০০ ঘন্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৫
এমএন/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।