ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

ঢেলে সাজানো হচ্ছে ঢাকা মহানগর আ.লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
ঢেলে সাজানো হচ্ছে ঢাকা মহানগর আ.লীগ

ঢাকা: সংগঠনকে গতিশীল করতে ঢেলে সাজানো হচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ- দুই ভাগে বিভক্ত করে মহানগরের নতুন দুই কমিটিতে বাদ পড়ছেন বর্তমান নেতৃত্বের অনেকেই।

বিশেষ করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যারা বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন তাদের রাখা হচ্ছে না নতুন কমিটিতে।   

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা ও জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। থানা কমিটিগুলোরও ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পাবে এসব বিষয়।

আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান, মহানগর ও থানা কমিটিগুলোর নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু হিসাব-নিকাশ প্রধান্য দেওয়া হবে। এর প্রধান মানদণ্ড হয়ে দাঁড়াতে পারে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নেতা-কর্মীদের ভূমিকা। সিটি নির্বাচনে যারা দল সমর্থিত প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং যারা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তারা মহানগরের নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়তে পারেন।

পাশাপাশি সহযোগী সংগঠন থেকে তরুণ নেতৃত্বের একটি অংশকে ঢাকা মহানগরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার চিন্তা-ভাবনা করছে আওয়ামী লীগ।

এদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের সময়ই বলা হয়েছিলো, যারা প্রার্থী হবেন তারা মহানগর, থানা, ওয়ার্ডের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ পাবেন না। সে অনুযায়ী দল সমর্থিত প্রার্থী দেওয়া হয়। কিন্তু দুই সিটি করপোরেশনেই অধিকাংশ ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থনের বাইরেও দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছিলেন। কোনো কোনো ওয়ার্ডে দলের সিদ্ধান্ত উপক্ষো করে আওয়ামী লীগের ৩/৪ জন প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

এবারই প্রথম স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ প্রর্থী বাছাই করে দলীয় সমর্থন দিয়ে তালিকা প্রকাশ করে। এর পরেও যারা দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন করেছেন তারা নতুন কমিটিতে আসতে পারবেন না বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা বাংলানিউজকে জানান।  

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের যারা সমর্থন দিয়েছেন তারা। মহাগনর আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ও দলীয় এমপি ভিতরে ভিতরে এ ধরনের প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন। নির্বাচনের সময়ই তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তারা দল সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী ও কাউন্সিলরদের পক্ষে কাজ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই নেতারা দুই মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে দূরুত্ব বজায় রেখে চলেছেন।

পাশাপাশি ওই সব নেতা ও এমপিদের পছন্দের অনেকেই কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর পদে সমর্থিত প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ওই নেতা ও এমপিদের সমর্থন ও সহযোগিতায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এই বিদ্রোহীদের কারণে কোনো কোনো ওয়ার্ডে দল সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন।

এসব কারণে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে জানা যায়। তারাও নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না।

এদিকে সংগঠনকে আরও গতিশীল করতে তরুণ নেতৃত্বের একটি অংশকে ঢাকা মহানগরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা যায়। সেক্ষেত্রে সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে মহানগর ও থানা কমিটিতে আনা হতে পারে। বিশেষ করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের যারা মহানগরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের আনা হতে পারে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী করতে বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের আন্দোলন মোকাবিলায় যারা জোরালো ভূমিকা রাখতে পারবে, রাজনীতিতে যাদের স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে এ রকম নেতৃত্বকে সামনে এনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোঁজ খবর নিয়েছে এবং আরও খোঁজ-খবর নিয়ে কমিটি চ‍ূড়ান্ত করবেন বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা আরও জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।