ঢাকা: আলোচনা করে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
রোববার (১৭ মে) বিকেলে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
রওশন বলেন, বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াওসহ নানা অস্থিরতার কারণে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এখন সবাই এক সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে।
‘আসছে বাজেট অধিবেশনে যেহেতু সবাই এক হবো, তখন পার্টির সবাই বসে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো। আর তখনই তা জানিয়ে দেওয়া হবে,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সালাহ উদিনকে পাওয়া গেছে, এজন্য লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করছি। উনি দেশে ফিরলে সব তথ্য মিলবে, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল নাকি তিনি স্বেচ্ছায় সেখানে (ভারতের মেঘালয়) গিয়েছেন?
এ নিয়ে সংসদে আসছে বাজেট অধিবেশনে আলোচনা হবে বলেও জানান বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ।
সংবাদমাধ্যমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘এরশাদ ও আমার মধ্যে বিরোধ চলছে- গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ ধরনের খবর অসত্য। তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। ’
‘সম্প্রতি তার (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) চোখের অপারেশন হয়েছে, আমি তাকে হাসপাতালে দেখতেও গিয়েছি,’ যোগ করেন ময়মনসিংহ-৪ আসনের এই সাংসদ।
সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ বলেন,‘নির্বাচনে যারা হারে তারা বলে সুষ্ঠু হয়নি, আর যারা জেতে তারা বলে সুষ্ঠু হয়েছে। তবে কোনো খুনা-খুনি হয়নি, তাহলে তো নির্বাচন সুষ্ঠুই হয়েছে। ’
‘আর হার-জিত তো আছেই। জাতীয় পার্টি সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই নির্বাচনে হেরেছে। বর্তমানে এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি,’ বলেন তিনি।
রওশন বলেন, নব্বইয়ের পর থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে এখনও যে জাতীয় পার্টি ঠিকে আছে, এটাই বড় সাফল্য। এজন্য জাতীয় পার্টি ধন্যবাদ পাওয়ারও যোগ্য। এখনও যে অস্থিত্ব আছে, এটাই তো বেশি।
সভায় মানব পাচার, সম-সাময়িক রাজনীতিসহ ১৩টি বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
মানবপাচার প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ বলেন, এটা অমানবিক। বন্ধ হওয়া দরকার। এজন্য সরকারও যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রয়োজনে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আরও কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
পহেলা বৈশাখে নারী নির্যাতনের ঘটনাকে অপ্রীতিকর উল্লেখ করে রওশন বলেন, এ ধরনের ঘটনা কারো কাছে কাম্য নয়। আমরা এর নিন্দা জানাই। এরই মধ্যে পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত করেছে। আমরা চাই অপরাধীরা উপযুক্ত শাস্তি পাক।
এ ধরনের ঘটনা বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু,
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী, আবু হোসেন বাবলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫, আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা
এসএম/এমএ