ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

মানুষের কল্যাণে ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫
মানুষের কল্যাণে ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের কল্যাণে সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। কারণ এখন আমার হারাবার কিছু নেই।

বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। বাবা-মা সহ পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি।

শনিবার (১৭ মে) শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাস ভবন গণভবনে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কোনো কিছুতে ভয় পাইনি। বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। মা-বাবা-ভাইকে হারিয়েছি। এখন নতুন করে হারাবার কিছু নেই।

তিনি বলেন, এখন আমার দেওয়ার পালা। আমি এখন দেশের মানুষকে কিছু দিতে চাই। আর এ মনোভাব নিয়েই মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে ভালো কিছু দিতে পারলেই আমি স্বস্তি পাই।

শুভেচ্ছা জানাতে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য ত্যাগ স্বীকারের চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না। আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আপনাদেরও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। এছাড়া জ্বালাও-পোড়াও এর ব্যাপরে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে এদেশে নতুন করে আর জ্বালাও পোড়াও না হয়। মানুষকে যেন আর পুড়ে না মরতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ ও ১৫ সালের ঘটনা আমরা দেখেছি। ‍মানুষ পুড়িয়ে মারার সে বীভৎস ঘটনা আর যাতে না ঘটে এ দিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে।

৭৫’এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারের হত্যার পর দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে ৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফিরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনের স্মৃতি ও ১৫ আগস্টের হৃদয়বিদারক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

শেখ হাসিনা বলেন, ৩০ জুলাই আমরা জার্মানিতে গিয়েছিলাম। কখনও ভাবতেও পারিনি মাত্র ১৫দিন পর এভাবে সবাইকে হারাবো। যুগশ্লোভিয়ার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো, ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্রয় দিতে চেয়েছিলেন। আমরা ভারতে চলে আসি। ৬ বছর পর যখন দেশে ফিরি তখন আমাকে আসতে দিতে চায়নি।
 
তিনি বলেন, আমার অজান্তেই আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়েছিলো। আমি চেষ্টা করেছিলাম নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। সংগঠনকে যাতে শক্তিশালী করা যায়। যখন দেশে ফিরলাম তখন আমার জন্য এতো ব্যথা অপেক্ষা করছে ভাবতেও পারিনি। বিমান বন্দরের লাখ লাখ মানুষ, তাদের ভালবাসায় আমি সিক্ত হয়েছি। কিন্তু যাদের রেখে গিয়েছিলাম তাদের কাউকে এসে পাইনি।
 
আমার একটি প্রতিজ্ঞা ছিলো এতো বড় অন্যায় মেনে নেয়া যায় না। এর প্রতিকার করতে হবে। আর আমার বাবা যে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন এতো মানুষ স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছেন, সে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য একটা কিছু করতে হবে। যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেটাকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিলো।

আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। এটাকে ধরে রাখতে হবে। দেশের মানুষের ভালবাসা দলের নেতাকর্মীদের সহযোগীতাই আমাকে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছে। এ জন্য আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সতীশ চন্দ্র রায় প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫/আপডেটেড ০২২৬ ঘণ্টা, মে ১৮
এসকে/বিএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।