ঢাকা: নির্বাচন কমিশন রাজনীতিবিদদের কাছে জিম্মি। কমিশন স্বাধীন হোক তা তারা চায় না- এ মন্তব্য সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফের।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন না হলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। জনগণের ভোটাধিকার জনগণের কাছে কেউ ফিরিয়ে দিতে চায় না।
সোমবার বিকেলে (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নির্বাচন কমিশন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এর আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে না পারায় গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। গণতন্ত্র পুরুদ্ধারে জনগণের ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কর্ম বুঝে কর্ম করতে হবে। কর্তা বুঝে নয়।
কমিশন স্বাধীন না হওয়ার পিছনে সংবিধানকে দায়ী করেন সাবেক এ প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
সিটি নির্বাচনে কারচুপির ছবিগুলো সিডি, বই আকারে হাজার হাজার কপি করে সাধারণ মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত আর কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। বিএনপির দলীয় দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠে আবারও আন্দোলনে নামতে হবে।
সিটি নির্বাচনে কারচুপির ছবিগুলো প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর পরামর্শ দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তো কারচুপি দেখেও ব্যবস্থা নেয়নি। প্রধান বিচারপতি নীতি কথা বলেন। ওনার কাছে পাঠালে হয়তো ব্যবস্থা নেবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, এত কারচুপির পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ’
সামান্যতম লজ্জাবোধ থাকলে তিনি পদত্যাগ করতেন। কলঙ্কিত এ নির্বাচনের জন্য এ নির্বাচন কমিশনার ইতিহাসে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে আয়োজন তাতে প্রতি ৮ সেকেন্ডে একটি ভোট পড়ার কথা। কিন্তু কীভাবে বাক্স ভর্তি হয়ে যায়।
তবে এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে শুধু সিটি নির্বাচন না, কোনো নির্বাচনই সম্ভব নয়। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে নির্বাচনী সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে।
বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ বলেন, গণতন্ত্র এখন জাসদতন্ত্র হয়ে গেছে। না হয় শেখ হাসিনার পাশে ইনু থাকতো না। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সব মানবিক গুণাবলী বিসর্জন দিয়েছেন। তাদের চোখের সামনে সব ঘটলেও না দেখার ভান করেছেন।
সেনাবাহিনী নামানো বিষয়ে তিনি বলেন, সেনা নামানো হলে ফরিদপুরের তিন সেনাপতি (ৠাব, পুলিশ ও বিজিবি প্রধান) তাদের ক্ষমতা জাহির করতে সেনা নামতে দেয়নি।
গোলটেবিল বৈঠকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপি, ভাঙচুর, ভোট বাক্স ছিনতাই, হয়রানিসহ ছবি প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
এমএম/এএ