ঢাকা: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী (৩০ মে) উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
শুক্রবার (২২ মে) বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
২৭ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ঘোষিত এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, কালো ব্যাজ ধারণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ইত্যাদি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ২৭ মে আলোচনা সভা করবে মহিলা দল। এরপর ২৮ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিউটশনে কেন্দ্রীয় বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। ওই দিন দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। পরদিন ২৯ মে-ও থাকছে দেশব্যাপী আলোচনা সভা।
৩০ মে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সমাধি প্রাঙ্গণে পবিত্র কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। এরপর প্রয়াত এ রাষ্ট্রপতির রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হবে।
এদিন নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলের সবগুলো কার্যালয়ে বিএনপির দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। পাশাপাশি উত্তোলন করা হবে কালো পতাকা। এছাড়া, নেতাকর্মীরা ধারণ করবেন কালো ব্যাজ।
৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত তিন দিন দেশব্যাপী গরিব-দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করবে বিএনপি। রাজধানীতে এ কর্মসূচি পালন করবে ঢাকা মহানগর বিএনপি। ৩০ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণে এবং ৩১ মে ঢাকা মহানগর উত্তরে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১০ জুন পর্যন্ত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, মহিলা দল সভাপতি নূরী আরা সাফা, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সভাপতি আবদুল মালেক, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ।
গত ১৪ মে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের যৌথসভায়ই এসব কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বাকশাল হটিয়ে জিয়াউর রহমান যে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গেছেন সে গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে। যতদিন পর্যন্ত হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এ আন্দোলন চলছে এবং চলবে।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছেন। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানে সে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার প্রমাণ জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনায় এসে সামরিক আইন জারি করেননি, সংবিধান স্থগিত করেননি, সংসদ ভেঙে দেননি। সংবিধান মেনে তিনি রাষ্ট্র চালিয়েছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছেন, গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটিয়েছেন। জিয়ার প্রতিষ্ঠিত সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি।
দেশে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্য গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন উল্লেখ করে এজন্য দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৫
এমএম/এইচএ/