ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকুন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৫
অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকুন ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতকে ‘অশুভ শক্তি’ হিসেবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই অশুভ শক্তি কখনই যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে জন্য জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।

শনিবার (২৩ মে) বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগে এক সুধী সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।



হাজারীবাগ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উদ্বোধন এবং শহীদ শামসুন্নেছা আরজু মনি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি-জমায়াতের টানা তিন মাসের হরতাল-অবরোধে সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে তারা মানুষ হত্যা করেছে। আবার তারা এই জানুয়ারি থেকে মানুষ হত্যা শুরু করে।

জনগণকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখবেন, দুর্যোগ একবার আসে, কেটে যায়। আবার যে দুর্যোগ আসবে না, তা কিন্তু না। এই বিএনপি-জামায়াত কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে তাদের জন্মও হয়নি। হত্যা-ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে তাদের জন্ম, তাদের প্রতিষ্ঠা। তাদের যে চরিত্র, যে স্বভাব, তা কখনো পরিবর্তন হবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

তাই, মানুষকে এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কারা জনগণের জন্য উন্নয়ন করে, জনগণের জন্য কাজ করে, সে কথাটা বিবেচনা করতে হবে।

সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ই প্রমাণ করে দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত এবং মানুষ ধ্বংস চায় না। শান্তি চায়। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক, মানুষ সেটাই চায়।

নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যাসহ সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে নির্যাতন করেছে, তাতে মানুষ তাদের ভোট দেবে কেন?

সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বিভিন্ন খাতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম সম্প্রসারণে সারাদেশে ২৮৫টি ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ৫৪৯টি ফায়ার স্টেশনের নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। জনবল ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজারে উন্নীত করা, ৬২ হাজার কমিউনিটি ভলান্টিয়ার তৈরির পরিকল্পনা, যানবাহন বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ  হাসিনা।

ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়নে আধুনিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনা এবং কর্মীদের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনসহ স্বাস্থ্যখাতে সরকারের বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি চিকিৎসক ও নার্স বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্যখাতে জনশক্তি বৃদ্ধি ও পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো, নতুন হাসপাতাল নির্মাণ, স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রসারে সরকারি ৫টি ও বেসরকারি ২০টি মেডিকেল কলেজ, ১১টি ডেন্টাল কলেজ, ৪৭টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, ১০টি নার্সিং কলেজ, ৩১ নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনের কথা উল্লেখ করেন।

আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই জনগণের জন্য কাজ করে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ এ  বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে, একটা সরকার মানে জনগণের সরকার।

বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে হাজারীবাগ এলাকাবাসীর জন্য তৎকালীন সরকার কোনো কাজ করেনি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছিল তারা। সারা বাংলাদেশেরই একই চিত্র ছিল তখন। এই এলাকা ছিল সন্ত্রাস, দখলবাজি, লুটপাটের রাজত্ব। তাদের অত্যচার-নির্যাতন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তারা আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে পর্যন্ত হত্যা করেছে।

বিএনপি সরকার জনগণের জন্য কাজ করে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জন্য কল্যাণকর কোনো কাজ তাদের হাত দিয়ে হয়নি। হয়েছে লুটপাট, দুর্নীতি, টাকা বানানো, মানিলন্ডারিং, বিদেশে টাকা পাঠানো আর নিজেদের সাজুগুজু করে জৌলস বাড়ানো। এর বাইরে তারা আর কিছু করতে পারেনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসের মা শহীদ শামসুন্নেছা আরজু মনির নামে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের নাম বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে আবেগআপ্লুত হতে দেখা যায়।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান, স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ প্রমুখ।

সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৫/আপডেটেড: ২১৩৪ ঘণ্টা
এমইউএম/এমএ/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।