ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

পহেলা বৈশাখে নারী লাঞ্ছনা

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও আইজিপি’র বক্তব্যে ‘বেমিল’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৫
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও আইজিপি’র বক্তব্যে ‘বেমিল’ টিপু মুন্সী

ঢাকা: পহেলা বৈশাখে শাহবাগে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্যে ‘বেমিল’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সী।

রোববার (২৪ মে) জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।



টিপু মুন্সী বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আইজিপি যে কথা বলেছেন তার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে বেমিল রয়েছে।   তাছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটির একটি রিপোর্ট আমাদের দেওয়া হয়েছে, সেই রিপোর্টে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পহেলা বৈশাখে নারী লাঞ্ছনা ও অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিলো না।

বৈঠক শেষে টিপু মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠকে বর্ষবরণের দিন শাহবাগের নারী লাঞ্ছনা ও অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডসহ সম্প্রতি কয়েকজন ব্লগার হত্যার বিষয়ে আলোচনা হয়। আমাদের কাছে যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বলা আছে, এসব হত্যাকাণ্ডের সময় পুলিশের দায়িত্বে কোনো গাফিলতি ছিলো না। তারপরও কমিটির পক্ষ থেকে আরও গভীরভাবে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
 
পহেলা বৈশাখে নারী লাঞ্ছনার ঘটনার বিষয়ে আইজিপি নির্বাচন কমিশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পহেলা বৈশাখে পুরুষ নারী সেজে দুষ্টামি করেছে। এখানে কোনো নারী ছিলো না। ‍

এরপর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছিলেন, পহেলা বৈশাখের ঘটনায় পুলিশের ভিডিও ফুটেজের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পুরোপুরি উলঙ্গ করা হয়নি। এখানে প্রকৃত ঘটনা এখনো জানা যায়নি। তদন্ত হচ্ছে, তদন্ত শেষে সব পাওয়া যাবে। এজন্য কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে পুলিশকে দেওয়ার জন্যই প্রতিমন্ত্রী অনুরোধ করেন।

দশ বিশিষ্ট নাগরিকের হত্যা হুমকির বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে টিপু মুন্সী বলেন, যে দশজন ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, তারা কমবেশি সবার কাছেই পরিচিত। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বে সঙ্গে দেখতে বলা হয়েছে। পুলিশকে বলা হয়েছে, কোনো ঘটনা ঘটার আগেই তাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর নিরাপত্তা বাড়িয়ে লাভ কি?

আদিবাসী তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় একজন গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। এজন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে, বললেন টিপু মুন্সি।
 
এদিকে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের মিডিয়ায় কথা বলার ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করতে বলেছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান কামালের বলেছেন, কোনো ঘটনা ঘটার পরেই পুলিশের ঊর্দ্ধতন ব্যক্তিরা নানা মন্তব্য করে বসেন। তাই মিডিয়াতে কথা বলার ক্ষেত্রে সর্তক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনের সরকারি নীতিগত সিদ্ধান্তের  চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
 
এছাড়া কমিটি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ৫০ হাজার পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।
 
বৈঠকে পুলিশ বাহিনীর যানবাহন সমস্যা সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রিতা অবসানের পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের মাধ্যমে যানবাহন ক্রয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
 
আগামী ২৪ নভেম্বর মধ্যে সব পাসপোর্টধারী নাগরিককে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) আওতায় আনার লক্ষ্যে কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
 
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটি সদস্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শামসুল হক টুকু, মো. ফরিদুল হক খান, আবুল কালাম আজাদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফখরুল ইমাম, কামরুন নাহার চৌধুরী।
 
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৫
এসএম/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।