ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে যাত্রী হত্যার দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি চার্জশিট আমলে নেওয়ার বিষয়ে আগামী ২৮ জুন নথি পর্যালোচনা ও আদেশের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) চার্জশিট তিনটি উত্থাপনের পর এ আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আরেফিনের আদালত।
খালেদার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি মামলায় গত ৫ মে ঢাকার সিএমএম আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই বশির আহমেদ। ১৯ মে বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপর মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের অপর এসআই জাহিদুল ইসলাম।
খালেদা জিয়াকে চার্জশিট তিনটিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
চার্জশিটে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বরকত উল্লাহ বুলু, আমান উল্লাহ আমান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, বিশেষ সহকারী শামসুল ইসলাম শিমুল বিশ্বাস, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, মীর আবু জাফর শামসুদ্দিন দিদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপির ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ, তার ছেলে তানভীর ওরফে রবিন, নবীউল্লাহ নবী, কাইয়ূম কমিশনার, লতিফ কমিশনার এবং পেশাজীবী দলের নেতা সেলিম ভূঁইয়া।
অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এজাহারভুক্ত অপর ৪২ আসামিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে বর্তমানে ৭ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। খালেদা জিয়াসহ বাকি ৩১ জনকে পলাতক দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে চার্জশিটে।
গত ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামক এক বৃদ্ধ যাত্রী।
এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন থানার উপ-পরিদর্শক কে এম নুরুজ্জামান। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/২৫(ঘ) ধারায় দায়ের করা হয় আরও একটি মামলা। মামলা দু’টিতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ১৮ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে যাত্রাবাড়ী বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীসহ মোট ৮০ জনকে মামলার আসামি করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সোহাগ ও লিটন নামে দু’জন গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে কারা কারা জড়িত, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৫
এমআই/এএসআর