ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর শেষে সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি হোটেল সোনারগাঁয়ে ফিরে গেছেন। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোদিকে কার্যালয় থেকে বিদায় জানান।
শনিবার (০৬ জুন) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তিনি বিদায় নেন।
তবে এর কিছুক্ষণ পর রাত ৮টায় দুই প্রধানমন্ত্রীর আবার দেখা হবে হোটেল সোনারগাঁয়ে। সেখানে গ্র্যান্ড বল রুমে অনুষ্ঠিত হবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজসভা। রাত সাড়ে ৯টায় এ কর্মসূচি শেষ হবে।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে যৌথ বিবৃতিতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যৌথ বিবৃতির শুরুতে বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। এরপর বক্তব্য রাখেন নরেদ্র মোদি।
একই হলে এর আগে এক যোগে সাত প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
দু’টি রেলপথ, একটি সেতু, সীমান্তহাট, সারদায় মৈত্রীভবন ও বিএসটিআই'র জন্য একটি টেস্টিং ল্যাব তৈরির এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে যৌথভাবে।
শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এই প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্পগুলো হচ্ছে- খুলনা-মংলা পোর্ট রেলওয়ে লাইন, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলওয়ে লাইন, ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত প্রথম মৈত্রী সেতু, শিলাইদহে রবীন্দ্র কুঠীবাড়ির সম্প্রসারিত উন্নয়ন কার্যক্রম, তারাপুর-কমলাসাগর সীমান্ত হাট, সারদা পুলিশ লাইনে বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী ভবন ও বিএসটিআই'র উন্নত মানের টেস্টিং ল্যাব।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলি হলে বাংলাদেশ-ভারত প্রতিনিধি দল বৈঠকে বসে। বৈঠকে দুই দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় এই বৈঠক।
তার আগে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নেতৃত্ব দেন হাসিনা ও মোদি।
শনিবার বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিয়ে তেজগাঁয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দু’টি নতুন রুটে বাস চলাচল উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এর পর বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে গোলাপ হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন মোদি। সেখানে ২০ মিনিট একান্তে কথা বলার পর শাপলা হলে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থন দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন দুই নেতা।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি।
রোববারও (০৭ জুন) বাংলাদেশে ব্যস্ত দিন কাটাবেন মোদি। সকালে তার ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে। দুপুরে বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে দেওয়া হবে বিশেষ সংবর্ধনা। এরপর মোদির সম্মানে রাষ্ট্রপতির দেয়া মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এ সময় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের হাত থেকে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির জন্য বিশেষ সম্মাননা গ্রহণ করবেন নরেন্দ্র মোদি।
বঙ্গভবনের কর্মসূচি শেষে হোটেলে ফেরার পর পৃথকভাবে তার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির বিশেষ বক্তৃতা। বক্তৃতা শেষে রাত ৮টা ২০ মিনিটে শাহজালাল (রহ.) থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে দেশের উদ্দেশে উড়াল দেবেন মোদি। সেখানে ভিভিআইপি টারমাকে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে, নরেন্দ্র মোদির সফরের একদিন আগেই ঢাকা পৌঁছান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার রাত ৮টা ৩১ মিনিটে ঢাকা পৌঁছান তিনি।
নরেন্দ্র মোদি ও মমতা ব্যানার্জির এই সফর উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক সেজেছে বর্ণিল সাজে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত পুরো রাজপথ জুড়ে শোভা পাচ্ছে মোদি ও মমতার ছবি। রয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও। সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের পতাকা। আর রয়েছে লাল-নীল-হলুদ-সবুজ নিশান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৫
এমএমকে/এমইউএম/আরআই/এসএস