ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

রামগঞ্জে টেন্ডার ফরম বিক্রিতে বাধা, ছাত্রলীগ-যুবলীগ হাতাহাতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৫
রামগঞ্জে টেন্ডার ফরম বিক্রিতে বাধা, ছাত্রলীগ-যুবলীগ হাতাহাতি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের একটি গ্রুপের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এক কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার ঠিকাদারী কাজের টেন্ডার ফরম বিক্রিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (৭ জুন) দুপুরে ফরম কিনতে গেলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

একপর্যায়ে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকের টেবিলের গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। এদিকে ফরম কিনতে না পেরে সাধারণ ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রুহুল আমিন সিন্ডিকেট করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু সংখ্যক নেতাকে দিয়ে এ টেন্ডারের ফরম বিক্রি-নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা ঠিকাদারদের ফরম কিনতে বাধা দেয়।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও এডিপির (রাজস্ব) আওতায় ১১টি প্যাকেজে দরপত্রের সিডিউল আহ্বান করা হয়। টেন্ডারে রাস্তা-ঘাট মেরামত, হাট-বাজার ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এক কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার কাজ বাজেট ধরা হয়। দরপত্র বিক্রির শেষ দিন ছিল রোববার (৭ জুন)। দরপত্র দাখিলের শেষ সময় সোমবার (৮ জুন) দুপুর ১টায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার দাবি, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা অফিসে এসে টেন্ডারের ফরম বিক্রি করতে তাদের নিষেধ করেছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তারা জানান। সাধারণ ঠিকাদাররা যেন ফরম কিনতে না পারে এজন্য তারা (যুবলীগ-ছাত্রলীগ) অফিসের সামনে ও ভেতরে ঘোরাঘুরিও করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এলজিইডি কার্যালয়ে দুপুর একটার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ঠিকাদার এমরান হোসেন বাচ্চু এডিপি প্রকল্প কাজের ফরম কিনতে যায়। এ সময় আঙ্গারপাড়া এলাকার যুবলীগ নেতা মিল্লাদ তাকে ফরম কিনতে বাধা দেয়। এ নিয়ে এমরান ও মিল্লাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে প্রকৌশলীর হিসাব রক্ষকের টেবিলের গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতার অভিযোগ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা সিন্ডিকেট করে দলীয় নেতাকর্মীদের এডিপির কাজগুলো ভাগ করে দিয়েছেন। প্রত্যেকটির বিপরীতে নিয়ম রক্ষার জন্য তিন-চারটি করে দরপত্রের সিডিউল দাখিল করা হবে। এজন্য তাদের শতকরা ১০ ভাগ হারে টাকা অগ্রিম দিতে হয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতা এমরান হোসেন বাচ্চু বলেন, আমি টেন্ডার ফরম কিনতে পারিনি। হাতাহাতির একপর্যায়ে টেবিলের গ্লাস ভেঙে গেছে।

এদিকে, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত মাহমুদ শামছু বলেন, ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মী ঠিকাদারদের ফরম কিনতে বাধা দেয়নি।

রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আ ক ম রুহুল আমিন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টেন্ডার ফরম বিক্রি হচ্ছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে এলজিইডি অফিসের সামনে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে দু’জনের হাতাহাতি হয়েছে। টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আমাদের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

ঘটনার পর থেকে রামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আকবর আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মাহাবুবুল আলম বলেন, আমি লক্ষ্মীপুরে মিটিংয়ে থাকায় বিষয়টি শুনিনি। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।