ঢাকা: বাস্তবায়নের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে করা চুক্তিগুলো নিয়ে জাতীয় সংসদ ও সংসদের বাইরে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেছেন, মোদির সফরে ভারতের সঙ্গে করা চুক্তিগুলো বাস্তবায়নের আগে জনগণকে জানাতে হবে।
বুধবার (১০ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে চুক্তির বিষয়গুলো সংসদে উত্থাপন করবেন। সংসদ ও সংসদের বাইরে এ নিয়ে খোলামেলা কথা হওয়া উচিত। যাতে কোনো লুকোচুরি না থাকে।
ভারতের কাছ থেকে উপযুক্ত পাওনা আদায়ে জনগণের সমর্থিত শক্তিশালী সরকার প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের উপযুক্ত পাওনা আদায় করতে ব্যর্থ হলে মোদিকে দায়ী করা ঠিক হবে না। এজন্য আমাদের সবার আগে প্রয়োজন জনগণের শক্তিতে শক্তিশালী সরকার।
তিনি বলেন, যতক্ষণ না আমরা শক্তিশালী সরকার পাবো; ততক্ষণ আমাদের অন্যের করুণার পাত্র হয়েই থাকতে হবে।
এমাজউদ্দীন বলেন, অন্য দেশের জায়গার প্রতি আমাদের কোনো লোভ নেই। তবে জনগণের সমর্থনের সরকার হলে ১ ইঞ্চি জায়গাও ছেড়ে দেবে না।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযোগ করছি না সত্যি বলছি- এ সরকার একেবারে জনগণের সমর্থন ছাড়া, জনগণের ম্যান্ডেট বিহীন সরকার।
তিনি প্রশ্ন রাখনে, এ সরকার দিয়ে অন্য একটি প্রবল শক্তিশালী সরকারের কাছ থেকে কী পেতে পারি আমরা।
আঞ্চলিক কানেকটিভিটি ও ট্রানজিটের কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আমি আমার উঠান একজনকে ব্যবহার করতে দেবো। কিন্তু অন্যের উঠানে পা দেওয়ার ক্ষমতা আমার থাকবে তো?
সীমান্তে হত্যা বন্ধ প্রসঙ্গে ঢাবির সাবেক এ ভিসি বলেন, পৃথিবীর অধিকাংশ বর্ডারই শান্তিপূর্ণ। এমন কী ভারত-পাকিস্তান বর্ডারও। হয়তো সেখানে ভয় কাজ করে, একটা গুলি করলে যদি ৫ গুলি খেতে হয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বছরে প্রায় ১ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। অথচ এ বিষয়ে মোদির সফরে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি! ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিও কিছু বলেননি!
তিস্তা চুক্তি বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, বার বার তিস্তা নদীর নাম উচ্চারণ করা হলেও তিস্তা নদীকে প্রাণবন্ত করার কোনো কথা আমাদের দিক থেকেও বলা হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীও বলেননি। আসলে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, শুধু আশার কথাই বলা হয়েছে। আর বলা হয়েছে আশ্বাসের কথা।
এদিকে মোদির সঙ্গে যাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ না হয় সেজন্য সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বলে সভায় অভিযোগ করেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রুহুল আলম চৌধুরী।
মোদির সফর বিষয়ে তিনি বলেন, সফর ফলপ্রসু হয়নি একথা আমি বলবো না। কতটুকু সফল হয়েছে সেটা সময়ই বলবে। জনগণ তখন তা দেখবে। সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি একেএম রকিবুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৫
এমইউএম/আইএ