ঢাকা : আগামী জাতীয় সম্মেলনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে(কেন্দ্রীয় কমিটি) কিছু পরিবর্তন আসছে। এই পরিবর্তনে সভাপতিমণ্ডলীতে পুরনো সদস্যদের কাউকে কাউকে ফিরে আনাসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে কেউ কেউ বাদও পড়তে পারেন।
এই সম্মেলনের বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আসার বিষয়টি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আলোচিত হচ্ছে। কারা কারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারেন। কারা কারা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন নিয়ে কর্মীদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা।
চলতি বছর ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। দলের গঠনতন্ত্রে প্রতি তিন বছর পর পর সম্মেলনের নির্দেশনা রয়েছে। গত ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর সম্মেলনের পর বর্তমান কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিসেম্বরেই আগামী জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলকে আরও গতিশীল ও সংগঠনকে শক্তিশালী করতে যথাসময়ে সম্মেললন করার কথা চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা জানান।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক সুত্র জানায়, আগামী সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশ কিছু পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিবর্তনে নতুন করে অন্তর্ভূক্তি এবং বাদ দেয়া এ দুই বিষয়ই রয়েছে।
এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে বাদ পড়া দলের প্রবীণ নেতাদের কয়েকজনকে আবারও ফিরিয়ে আনা হতে পারে। আবার বর্তমান কমিটির বিভিন্ন পদে থাকা কাউকে কাউকে নতুন কমিটিতে বাদ দেয়া হতে পারে।
ওই সূত্রগুলো জানায়, দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে এই সম্মেলনের মাধ্যমে পুনরায় সভাপতিমণ্ডলীতে নিয়ে আসা হবে। এর আগে ২০০৯ সালের ২৪ জুন অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এই তিন নেতাসহ প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক ও প্রয়াত আব্দুল জলিল(তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক)কে সভাপতিমণ্ডলী থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলের এই প্রবীণ ও অভিজ্ঞ তিন নেতাকে আবারও সভাপতিমণ্ডলীতে আনার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আগামী সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে রয়েছেন এরকম কয়েকজন বাদ পড়তে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতাসহ নানা অভিযোগের কারণে এদের সরিয়ে দেয়া হতে পারে। আবার বাদ না পড়লেও কারো কারো পদ-পদবী কমতে পারে। বিশেষ করে সম্পাদকমণ্ডলীর কোনো কোনো পদ থেকে কাউকে কাউকে বাদ দিয়ে এবং ওই সব পদে নতুন করে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে একটা পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে।
ওই সূত্রগুলো জানায়, এই বাদ পড়ার তালিকায় বিগত মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন নেতাদের কারো কারো কথাও শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীসহ বিভিন্ন পদে আছেন এমন বেশ কয়েকজন নেতা বিগত মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন। বিভিন্ন কারণ ও অভিযোগে তারা বর্তমান মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
আগামী সম্মেলনে এদের কেউ কেউ কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন বা পদ-পদবী কমে যেতে পারে। এ নিয়ে কেউ কেউ আশংকায়ও রয়েছেন।
জাতীয় সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরইমধ্যে এ বিষয় নিয়ে আমরা দলে আলোচনাও করেছি। সেই লক্ষ্যেই জেলা সম্মেলনের কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। আশা করছি ডিসেম্বরেই জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যথা সময়ে সম্মেলন করার চিন্তা করছি। এরইমধ্যে অধিকাংশ জেলা সম্মেলন শেষ হয়েছে। বাকীগুলোও দ্রুত শেষ হবে। সম্মেলনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১২২ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৫
এসকে/এনএস/